শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

একুশের কর্মসূচি সফলে নিরলস প্রস্তুতি ছাত্রদের

যাযাদি নিরপোর্ট
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
একুশের কর্মসূচি সফলে নিরলস প্রস্তুতি ছাত্রদের

১৯৫২ সালের ফেব্রম্নয়ারির প্রতিটি দিনই ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। মায়ের ভাষার প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা সংগ্রামীদের সাহস জুগিয়েছিল বুকের তাজা রক্ত ঝরাতে। রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে মায়ের ভাষা। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সেদিন বুকে ধারণ করেছিলেন একই শপথ। মায়ের ভাষা বাংলাকে যেকোনো মূল্যে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে হবে। পূর্ব বাংলায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে বাংলা ভাষা। শাসকগোষ্ঠী যেহেতু স্বীকৃতি দেবে না, তাই তাদের ষড়যন্ত্রও অব্যাহত ছিল।

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের পূর্বঘোষিত ২১ ফেব্রম্নয়ারির সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে ছাত্র ও নেতারা নিরলসভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলেন। এদিকে প্রদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একুশের কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতাকে উদ্বুদ্ধ করতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঢাকা ফিরতে শুরু করেন। এদিকে, পাকিস্তান সরকার ওই দিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন। ছাত্ররাও সিদ্ধান্ত নেন ১৪৪ ধারা ভেঙেই তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি সফলে এগিয়ে যাবেন। একুশের কর্মসূচির আগে ২০ ফেব্রম্নয়ারি সন্ধ্যায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা আহ্বান করা হয়।

এদিকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়। এ ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই প্রতিবাদে সামিল হন কবিরাও। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদে কবিতা ও গান লিখে আন্দোলনকে এগিয়ে নেন। কবিতা ও গানে জ্বলে ওঠে বিদ্রোহের আগুন।

ভাষা আন্দোলনের মতো আবেগিক বিষয়ের পুনরায় জোরালো হওয়ার পেছনে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিনের ভাষণ প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার প্রতিবাদে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২৯ জানুয়ারি প্রতিবাদ সভা এবং ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালন করে। সেদিন ছাত্রসহ নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমবেত হয়ে ৪ ফেব্রম্নয়ারি ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা এবং ২১ ফেব্রম্নয়ারি প্রদেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার লাইব্রেরি হলে অনুষ্ঠিত সভায় মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মিপরিষদ গঠিত হয়। সভায় আরবি লিপিতে বাংলা লেখার সরকারি প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা হয় এবং ৩০ জানুয়ারির সভায় গৃহীত ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন দেওয়া হয়। একুশে ফেব্রম্নয়ারি হরতাল, সমাবেশ ও মিছিলের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এদিনও ছাত্ররা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে