নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারের ঘটনায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র এবার বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করল। মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, 'আমরা উদ্বিগ্ন, শ্রম এবং দুর্নীতি দমন আইনের অপব্যবহারের যে ধারণা তৈরি হচ্ছে, সেটা আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং ভবিষ্যতের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগপ্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।'
এর আগে, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় তিন বছর আগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের এক মামলায় গত ১ জানুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ইউনূসসহ চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। আপিলের শর্তে সেদিনই তাদের জামিন দেওয়ায় কাউকে কারাগারে যেতে হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে এর বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইবু্যনালে আপিল করেন ড. ইউনূস।
পরে শ্রম ও কলকারখানা অধিদপ্তরের এক আবেদনে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আদেশ দেয়, বিদেশে যেতে হলে ড. ইউনূসকে শ্রম আপিল ট্রাইবু্যনালে জানিয়ে যেতে হবে।
এদিকে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুদক। এর মধ্যেই সোমবার রাজধানীর
মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডে গ্রামীণ টেলিকম ভবন 'দখল করার চেষ্টার' অভিযোগ ওঠে। সে বিষয়টি সামনে এনেই মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, 'ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলার বিষয়ে আমি বলতে চাই, আমাদের মতে, শ্রম আইনের মামলাটির বিচার হয়েছে অস্বাভাবিক গতিতে। আরও এক মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে। ড. ইউনূসকে হয়রানি ও ভয় দেখানোর জন্য বাংলাদেশে শ্রম আইনের অপব্যবহার হচ্ছে বলে অন্যান্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগের সঙ্গে আমরা একমত।'
এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের বিদেশি বিনিয়োগপ্রাপ্তি বাধাগ্রস্ত করতে পারে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, 'আপিল প্রক্রিয়া চলার এই সময়ে ড. ইউনূসের জন্য নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।'