ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় ৯ ছাত্র আহত ক্যাম্পাস থমথমে

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রম্নপের হামলায় সাধারণ সম্পাদক গ্রম্নপের কমপক্ষে ৯ ছাত্র আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মান্নান হলে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে হামলার ঘটনার জেরে বুধবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ দিন বিকালেও ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। হামলায় আহতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের রকি, আইসিটি বিভাগের জয় ধর, কেমিস্ট্র্রি বিভাগের সজিব শেখ, অর্থনীতি \হবিভাগের সৌরভ, মিনার, নাঈম রাজ, আইসিটি বিভাগের সৌরভ, টেক্সটাইল বিভাগের তামীম। আহতদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের মধ্যে সোহানকে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল) ও রকিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতরা টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতের খাবার শেষে আহতরা আব্দুল মান্নান হলের ছাদে বসে গল্প করছিলেন। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীলের অনুসারী সাফি মোরসালিন, আবিদ, রকি, ছাত্রদল সমর্থিত ইদ্রিস, রবিউল, অপু, বিশ্বজিৎ ও রুবেলের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে তারা বিএনবি বিভাগের সোহানুর রহমান সোহানকে হলের তিন তলার ছাদ থেকে নিচে ফেলা দেওয়া হয়। হামলার ঘটনায় আহত ৯ জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত সোহানকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তার কোমর ভেঙে গেছে ও দুই পায়ের হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। পরে তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বুধবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। উভয় পক্ষই ছোট ছোট দলবেঁধে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় ছিল। এ দিন বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীর জানান, অতর্কিত হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর চেষ্টা করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর রাখতে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানান। টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার পর পরই আব্দুল মান্নান হলের বিভিন্ন কক্ষে অভিযান চালিয়ে ২০টি লোহার রড ও দু'টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কোনো মামলা করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেতা আব্দুল মান্নান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আশরাফ হোসাইন তালুকদার জানান, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।