পাকিস্তানে এবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সাধারণ নির্বাচনের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন দল সরকার গঠন করবে এবং দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা পরিষ্কার হয়নি। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার এবং তার দল নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়লেও দলটির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পার্লামেন্টের বেশিরভাগ আসন জিতেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মোট ১০১টি আসনে জয়ী হয়েছে। এর মধ্যে ৯৩টি আসনেই জয় পেয়েছেন পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা- যা এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক। তবে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৪ আসনের সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠতা তারা অর্জন করতে পারেনি। নির্বাচনী ফলাফল অনুযায়ী, বর্তমানে কোনো দলেরই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন নেই।
এমন অবস্থায় নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ পিএমএল-এন এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি-পিপিপি
সরকার গঠনের লক্ষ্যে কৌশলী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। অন্যদিকে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ- পিটিআই একটি জোট গঠনের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে।
আসন সংখ্যার দিকে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নওয়াজ শরিফের দল। তার দল ৭৫টি আসন পেয়েছে। এর পরের অবস্থানে থাকা বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পেয়েছে ৫৪টি আসন। তবে দেশটির সামরিক সরকার নওয়াজ খানকে সমর্থন দেয় বলে গুঞ্জন রয়েছে।
পাকিস্তানে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে দেশটির সংবিধান ও নির্বাচনী আইনে বলে নির্ধারিত আছে। এই প্রক্রিয়াটি বোঝার আগে রাজনৈতিক দলগুলো কী করছে এবং তাদের সামনে কী ধরনের বিকল্প রয়েছে তা জানতে হবে।
কোন কোন দল দেখা করতে পারে?
পাকিস্তানে সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে ১৩৪টি আসনে বিজয়ী হতে হবে। এর বাইরে প্রতিটি দল বা জোট তাদের বিজয়ী আসন সংখ্যার ভিত্তিতে সংরক্ষিত ৭০টি আসন থেকে অংশ পাবে। সেই হিসাবে যে দল বা জোট সরকার গঠন করবে, তাদের সব মিলিয়ে ১৬৯টি আসন থাকতে হবে।
সেক্ষেত্রে পার্লামেন্টের তিনটি দলের জয়ী আসনের দিকে তাকালে বলা যায় যে এর মধ্যে দুটি দল জোট বেঁধে পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে।
আপাতদৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় বিকল্প বলে মনে হচ্ছে যে নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপলস একসঙ্গে সরকার গঠন করবে।
কিন্তু অন্যদিকে রাজনীতির সমীকরণ যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে এবং এক সময়কার বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর জোট বাঁধা অসম্ভব কিছু নয়।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক রফিউলস্নাহ কাকার বলেন, 'যেহেতু কোনো দলেরই সরল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এ অবস্থায় দলগুলোকে একটি সাধারণ অবস্থান বের করে জোট গঠন করতে হবে।'
জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির উদয় চন্দ্র বলেন, 'যারা আগে মি. খানকে ভোট দেয়নি তারাও গত দুই বছরে উপলব্ধি করেছে যে মি. খান ও তার দলের সঙ্গে সেনাবাহিনী যে আচরণ করেছে তা অন্যায়।' তিনি আরও বলেন, 'স্বতন্ত্রদের বাছাই করে, ভোটাররা সেনাবাহিনীর কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাচ্ছে, বেসামরিক গণতন্ত্রের জয় হোক।'
বিকল্প এক: পিটিআই+এমকিউএম
পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে একটি ছোট দলে যোগ দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাদের একাধিক দলের সঙ্গে জোট করতে হবে। এ মুহূর্তে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ী আসনগুলোকে একটি পস্ন্যাটফর্মে একত্রিত করা এবং জয়ী সাধারণ আসনগুলোর ওপর ভিত্তি করে মহিলা ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত জাতীয় পরিষদের আসনগুলো নিশ্চিত করা প্রয়োজন।?
নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হয় একটি দলে যোগ দিতে হবে বা স্বতন্ত্র পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক আসমা ফয়েজ বলেন, পিটিআইর জোট সরকার গঠন করার সম্ভাবনা বেশ কম কারণ ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করলেও তারা তাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না। তার মতে, পিটিআইর পক্ষে এই ছোট দলগুলোর কাছে পৌঁছানোর সংখ্যাগত কোনো সুবিধা নেই। ধরুন পিটিআই মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে উভয় দলের মোট আসন হবে ১০৯টি।
তিনি আরও বলেন, এরপর নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসন দেওয়া হবে। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী যে কোনো দলের প্রতি সাড়ে তিনটি সাধারণ আসনের জন্য একটি সংরক্ষিত মহিলা আসন বরাদ্দ করা হয়। এক্ষেত্রেও পিটিআইর বিশেষ কোনো সুবিধা হবে না। এরপরও অনেক অপশন আছে এবং কোনো কিছুই অসম্ভব নয় বলেও তিনি মনে করেন।
বিকল্প দুই: পিএমএল-এন+পিপিপি
বিকল্পের কথা মাথায় রেখে নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করছে। এখানে কিছু বিভ্রান্তিও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ পিএমএল-এন ধারণা দিয়েছিল যে পিপিপি তাদের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এই দাবি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে পিপিপি।
পিএমএল-এন রোববার মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও দেখা করেছে। সামাজিক উদারপন্থি দলটি এবার ১৭টি আসনে জয়ী হয়েছে। ওইদিন বৈঠকের পর পিএমএল-এনের কেন্দ্রীয় তথ্য সচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেছেন যে তার দল এবং এমকিউএমের মধ্যে নীতিগতভাবে একটি চুক্তি হয়েছে।
তবে এমকিউএম-পাকিস্তানের আহ্বায়ক খালিদ মকবুল সিদ্দিকী বলেন, তার দল নওয়াজের দলের সঙ্গে জোট করবে কিনা সে বিষয়ে 'এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি'।
একদিকে যেখানে পিএমএল-এন খুব দ্রম্নত অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছে, অন্যদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি ধীরগতিতে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি রোববার শেহবাজ শরীফসহ পিএমএল-এনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।
ইসলামাবাদে পিপিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে জোট গঠনের জন্য দলের কী কী বিকল্প রয়েছে, তারা কোন দলগুলোর সঙ্গে বসতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই দুই দলের জোট বাঁধা নিয়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা ইয়াসমিন বলেন, 'পিএমএলেন এবার পিপিপির পাশাপাশি কিছু ছোট দলের সঙ্গে জোট গঠন করতে পারে। দুটি দল ২০২২ সালে ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি জোট গঠন করেছিল। যারা গত আগস্ট পর্যন্ত শাসন করেছে।'
বিকল্প তিন: পিটিআই+পিপিপি
তবে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি এবার পিটিআইর সঙ্গে কথা বলবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিপিপি সিনিয়র নেতা শেরি রেহমান বলেন, পিপিপি'র দরজা সব রাজনৈতিক ব্যক্তির জন্য উন্মুক্ত। যদি পিটিআইর কথা বলা হয়, তাহলে তারা তাদের ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল তার থেকে সরে আসবে বলে মনে হয় না।
সে সময় এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেছিলেন, পার্লামেন্টে জোট সরকার গঠন হবে দুর্ভাগ্যজনক। তিনি আরও বলেছিলেন, দেশকে চলমান সংকট থেকে বের করে আনার ক্ষেত্রে জোট সরকার দুর্বল হবে। সংকট উত্তরণে একটি শক্তিশালী সরকার দরকার যারা কোনো চাপ ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
এমন অবস্থায় সরকার গঠনের জন্য পিপিপির সঙ্গে জোট করার চেয়ে ইমরান খান বিরোধী বেঞ্চে বসতে পছন্দ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যদি ইমরান খান সমর্থিত এই এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পার্লামেন্টে কঠিন বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন সেক্ষেত্রে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেও অনাস্থা প্রস্তাবের হুমকি তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকবে। এবারও ইমরান খানকে নিয়ে একই ধরনের কিছু বক্তব্য দিচ্ছেন তার দলের নেতারা।
কিন্তু সময় ও পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে বদলায়। ইমরান খান কবে তাদের ব্যাখ্যা পাল্টাবেন সে বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ ২০১৮ সালেও তিনি এমকিউএমসহ অন্যান্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে একটি জোট সরকার গঠন করেছিলেন।
যদিও অনাস্থা প্রস্তাবের সময় এমকিউএম ইমরান খানের পক্ষ ত্যাগ করে বিরোধীদের শিবিরে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেটা ভিন্ন আলোচনা।
এখন পিটিআই নেতাদের বলতে শোনা যাচ্ছে যে 'ইমরান খান আগের সরকারের মিত্রদের জড়ো করা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন।'
বিকল্প চার: বিরোধী দলে পিটিআই?
ইমরান খানের মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি জানান, সংখ্যাগত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে পিটিআইর জোট গঠনের পরিবর্তে বিরোধীদের বেঞ্চে বসার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এটা নির্ভর করছে নির্বাচনী এলাকায় ভোট পুনঃগণনার ওপর যেখানে তার মতে ফলাফলে কারচুপি হয়েছে।
জুলফি বুখারির মতে, 'পিটিআই একটি শক্তিশালী বিরোধী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করবে এবং দ্বিতীয় দফায় নওয়াজ ও বিলাওয়ালের সম্ভাব্য জোট পিডিএম-২ আবার ব্যর্থ হবে।' তিনি পিপিপি'র সঙ্গে পিটিআই'র জোট বাধার বিকল্প ধারণাও উড়িয়ে দিয়েছেন।
পিটিআই নেতা গওহর আলী খান স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, তার দল ষাটটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থানে ছিল। তার দাবি ওইসব আসনে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়কে পরাজয়ে রূপ দিতেই কারচুপি করা হয়েছে।
পিটিআইর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আইনজীবী রোববার কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করার পর গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ইমরান খান দলের নেতাদের অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কী করবেন সেটাই সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। যা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এসব প্রার্থীর সঙ্গে সব বড় রাজনৈতিক দল যোগাযোগ করছে এটা নিশ্চিত।
এ বিষয়ে প্রথম বিপর্যয় ঘটেছিল যখন পিটিআই লাহোরের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম কাদির নওয়াজ শরিফের দলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে ইমরান খান রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অবৈধ বিয়ে এই তিনটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ১৪ বছরের কারাদন্ড ভোগ করছেন।
নতুন জোট নিয়ে কী বলছেন বিশ্লেষকরা?
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাদিহা আফজাল বলেন, পিটিআই যদি সরকার গঠন করতে চায় তাহলে জোট করার মতো দল খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পথ হলো বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি।
এর পাশাপাশি এ সময় পিটিআইকেও নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা যেন দল থেকে আলাদা হয়ে নওয়াজ শরিফের দলে যোগদান না করে।
সাংবাদিক সারিল আলমেদাও এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করে বলেছেন, পিটিআই যাই করুক না কেন, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এক্ষেত্রে একটাই পথ আছে আর সেটা হলো পিপিপি'র সঙ্গে জোট করা। কিন্তু দলটি ইতোমধ্যে পিএলএম-এনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আমির রানার মতে, পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফের সবচেয়ে বড় ইচ্ছা চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এবং মি. নওয়াজ এ বিষয়ে পিপিপিকে রাজি করাতে পারবেন।
রাজনৈতিক দর কষাকষিতে, পিপিপি একমত হতে পারে যে নওয়াজ শরিফ অর্ধেক মেয়াদের জন্য এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বাকি মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন।
সেই সঙ্গে পার্লামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ পদ যেমন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, তারপর সিনেট নির্বাচনের পর, সেনেট চেয়ারম্যান সেই সঙ্গে জোটের মন্ত্রিত্বের ক্ষেত্রে পিপিপি'র এবার বড় অংশ পাওয়া উচিত।
পাকিস্তানের সরকার গঠন প্রক্রিয়া
পাকিস্তানে নির্বাচনের পর রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকার গঠনের নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়েছে দেশটির সংবিধান। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন দেশটির সংবিধানের অনুযায়ী সব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তিন দিনের সময় বেঁধে দেয়। এ সময়ের মধ্যে তাদের নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হয় যে তারা কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবে নাকি স্বতন্ত্র থাকবে। কারণ তারা কোনো দলে যোগ দেওয়ার পরই নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট মোট আসন রয়েছে ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬টি আসনে সরাসরি ভোট হয় এবং ৭০টি আসন থাকে সংরক্ষিত। ৬০টি মহিলাদের জন্য এবং ১০টি অমুসলিমদের জন্য।
যে দল সবচেয়ে বেশি সাধারণ আসনে জয়ী হবে তাদের সংরক্ষিত আসনের সর্বোচ্চ কোটা থাকবে।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের ১৪ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ফলাফল সংক্রান্ত গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। এরপর ভোটের দিন থেকে ২১ দিনের মধ্যে নতুন পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন ডাকতে হয়। অর্থাৎ ২৯ শে ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে পার্লামেন্ট অধিবেশনের আগে সরকার গঠনের সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
নবনির্বাচিত পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে সদস্যরা শপথ নেবেন, শপথের পর ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হবেন।
এরপর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হয়, তাই সম্ভবত পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফেব্রম্নয়ারির শেষ সপ্তাহে বা মার্চের প্রথম সপ্তাহে শপথ নেবেন।