সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কম খরচের প্রকল্প দ্রম্নত শেষ করার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কম খরচের প্রকল্প দ্রম্নত শেষ করার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন- এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি যেগুলোয় কম অর্থের দরকার, সেগুলো দ্রম্নত সম্পন্ন করার জন্য সব মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার সভাপতিত্বকালে দেওয়া প্রারম্ভিক ভাষণে এই তাগিদ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য, সেগুলো আমাদের নিতে হবে। প্রকল্প বাছাই করার সময় সে বিষয়টা আমাদের একটু দরকার, যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যটা অর্জন করতে পারি।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যেসব প্রকল্প অল্প খরচ করলেই দ্রম্নত শেষ হয়ে যাবে, সেগুলো সম্পন্ন করে ফেলা উচিত। তাহলে আমরা আবার নতুন প্রকল্প নিতে পারব। কিছু কিছু প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে আমার মনে হয়, সেগুলোও দ্রম্নত সম্পন্ন করা উচিত। কারণ দ্রম্নত শেষ না করলে খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি অহেতুক কালক্ষেপণ হয়। সেটা যেন আর না হয়।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'আজকে বৈশ্বিক কারণেই কিছু অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে, তা ছাড়া আমরা খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছিলাম। আমাদের প্রবৃদ্ধিও সেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। দেশের উন্নয়নটা ত্বরান্বিত হচ্ছিল। এ সময় কোভিড-১৯ অতিমারি আসায় বিশ্বব্যাপী সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ল। এরপর যখন আমরা এটি মোকাবিলা করে এর থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি, তখনই এল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন ও কাউন্টার স্যাংশন। এখন আবার গাজায় যেভাবে গণহত্যা চলছে,

আক্রমণ চলছে, বিশ্বব্যাপীই একটি অশান্ত পরিবেশ, যার কারণে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্য পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ও বেশি লেগে যাচ্ছে। বহির্বিশ্বের নানা কারণে চাপটা আমাদের ওপরও এসে পড়েছে।'

দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোয় বিষয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এতে ভালো ফল পাওয়া যায়।

বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদের পাশাপাশি জলাভূমিতে মাছ চাষের ওপর গুরুত্ব দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তার নিজের এলাকায় (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদের ব্যবস্থা করেছেন। যারা অনুপস্থিত মালিক, তারা একটা অংশ পাবেন। কিন্তু তাদের অংশটা একটু কম হবে। যারা শ্রম দেবেন, তারা একটা অংশ পাবেন। আর সমবায়ের জন্য একটা অংশ থাকবে, যাতে খরচটা চালানো যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি এটা করে যাচ্ছি। আমি মনে করি, এটাতে সফল হতে পারলে, সারা বাংলাদেশে এটা চালু করে দিতে পারলে কোনো জমি আর অনাবাদি থাকবে না।'

শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু জিনিস বাইরে থেকে আনতেই হয়। তারপরও সার্বিক উৎপাদন বাড়ানো গেলে এর শুভফলটা জনগণ পাবে। অন্যের ওপর আর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, তার সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করায় এখন দেশের প্রয়োজনের ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, 'এভাবেই ধীরে ধীরে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তা ছাড়া মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের উৎপাদনও বেড়েছে। মানুষের এগুলো গ্রহণের হারও বেড়েছে, যারা আগে আমিষ খাবার কথা চিন্তা করত না, এখন তারাও নিচ্ছে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি, অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে একেবারে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নটা আমাদের দরকার। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে