দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপির পরবর্তী কার্যক্রম প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে বিএনপি বলেছে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ এক দফা দাবিতে তাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলবে।
সোমবার মার্কিন দূতাবাসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
বৈঠকের পর মঈন খান ও পিটার হাসের হাস্যোজ্জ্বল ছবি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেইজে বৈঠকের খবর জানায়।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, 'ঢাকা দূতাবাস গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, সহনশীলতা, সুশাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। প্রতিটি কণ্ঠস্বর শোনা গেলেই গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে দেখা করে আনন্দিত।'
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, মঈন খান দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে দূতাবাসে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বের হন ৪টা ৫ মিনিটে।
বিএনপি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূত ২৮ অক্টোবরে পূর্বাপর ঘটনা এবং নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। জবাবে বিএনপি বলেছে, রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে ঘিরে সংঘর্ষের প্রকৃত ঘটনা, গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মধ্যে ১৩ জন নেতাকর্মীর মৃতু্য, ভোটে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে আসন 'ভাগ-বাটোয়ারার' এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যে একতরফা ছিল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ভোট বর্জন করায় ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সংসদ যে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল নয়- এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বিএনপি সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের চিঠির বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, এটি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি অংশ। এর মানে এই নয় যে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাদের আন্দোলন চলবে। তবে তারা কোনো সহিংতায় বিশ্বাস করে না। তাই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বেশ দৌড়ঝাঁপ করেন পিটার হাস। সরকারি দলের শীর্ষ নেতা এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন তিনি। সবার উদ্দেশে অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেন মার্কিন এই কূটনীতিক।