ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগ
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠা শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ
প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। এ ঘটনায় বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ওই শিক্ষকের অব্যাহতি ও নিপীড়ন-হয়রানির বিচারের দাবিতে রোববার দিনভর বিক্ষোভ করেছেন বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে তারা ক্লাস বর্জন করেছেন এবং এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওই ছাত্রী এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের কাছে কিছু তথ্যপ্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে শনিবার প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানের কাছেও লিখিত অভিযোগ দেন। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর সাংবাদিকতা বিভাগের ওই শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে শনিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হন বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের চলমান সব ব্যাচের (১৩, ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। আজ সকাল থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের নবম তলায় সাংবাদিকতা বিভাগের বারান্দায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে সাঁটানো পোস্টারে ওই শিক্ষককে 'যৌন নিপীড়ক'
আখ্যা দিয়ে 'ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত'ও ঘোষণা করা হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে তারা 'নিপীড়কের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও' প্রভৃতি বলে স্স্নোগান দেন। শিক্ষার্থীদের মিছিলটি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। শিক্ষার্থীদের আগেই সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপাচার্যের কার্যালয়ে যান। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে ভেতরে প্রবেশ করেন। অন্যরা উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্যও। তিনি বলেন, 'প্রক্টরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আমাকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি ও বিভাগের দুইজন শিক্ষক আজ উপাচার্যের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সভা করেছি, প্রক্টরও সভায় উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য সেখানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদেরও ডেকে নিয়েছেন। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এ বিষয়ে দ্রম্নত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে অভিযুক্ত অধ্যাপককে তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। পরে বেরিয়ে এসে অপরাজেয় বাংলায় সমাবেশে যোগ দিয়ে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিজ খান বলেন, উপাচার্য তাদের দাবির ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে পারেননি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের ক্লাস বর্জনসহ আন্দোলন-কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, সোমবারের (আজ) মধ্যে প্রশাসনের একটি সভা করে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।