সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার ৪৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ পাস করেছে ৪৯ হাজার ৯২৩ জন।
রোববার মহাখালীর পুরাতন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিল্ডিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন।
মন্ত্রী জানান, পরীক্ষায় পাস নম্বর পূর্ববর্তী বছরের মতো ৪০ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। এর ভিত্তিতে মোট ৪৯ হাজার ৯২৩ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এবারে পাসের হার ৪৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ছিল
২০ হাজার ৪৫৭ জন যা উত্তীর্ণ প্রার্থীর ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ৯ ফেব্রম্নয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজের ৫ হাজার ৩৮০টি আসনে এবং ৬৭টি অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৬ হাজার ২৯৫টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল প্রণীত নীতিমালার শর্তানুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর ও এসএসসি/সমমান এবং এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ হতে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে অর্জিত স্কোরের ভিত্তিতে মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী ৫৩৮০ জন (মেধা কোটায় ৫০৭২ জন, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫৬৯ জন ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত আসনের ৩৯ জন) পরীক্ষার্থীদের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
\হমোট ১ লাখ ৪ হাজার ৩৭৪ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এই শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ৩৬৯ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ২০০৫ জন আবেদনকারী ভর্তি পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। অনুপস্থিতির হার ১.৯২ শতাংশ।
পরীক্ষায় পাস নম্বর পূর্ববর্তী বছরের মতো ৪০ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। এর ভিত্তিতে মোট ৪৯ হাজার ৯২৩ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পাসের হার ৪৭.৮৩ শতাংশের মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ছিল ২০ হাজার ৪৫৭ জন যা উত্তীর্ণ প্রার্থীর ৪০.৯৮ শতাংশ। উত্তীর্ণ নারী প্রার্থীর সংখ্যা: ২৯ হাজার ৪৬৬ জন যা উত্তীর্ণ প্রার্থীর ৫৯.০২ শতাংশ।
সরকারি মেডিকেল কলেজের ৫ হাজার ৩৮০টি আসনের নির্বাচিত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ৩৪৭ জন এবং গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা ১০০৩ জন। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজ/ডেন্টাল কলেজ/ইউনিটে ভর্তিরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় সফল শিক্ষার্থীর সংখ্যা : ৩০ জন।
\হমোট ৫ হাজার ৩৮০টি সরকারি আসনের মধ্যে পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৩১২ জন এবং নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০৬৮ জন। মেধা কোটার ৫০৭২টি আসনের মধ্যে পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ১৯৪ জন (৪৩.২৬ শতাংশ) এবং নারী প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৮৭৮ জন (৫৬.৭৪ শতাংশ)। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মোট আসন সংখ্যার ৫ শতাংশ হিসাবে ২৬৯ জন শিক্ষার্থী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য সংরক্ষিত কোটায় ৩৯ জন শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা পাস নম্বর কত
এদিকে, লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি ১ নম্বর করে মোট (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের কত নম্বর কাটা
অন্যদিকে, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের ১০ নম্বর কাটা হবে। এ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় জেলা কোটা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্ধারিত সময়ে আসন পূরণ করা না গেলে সেসব আসনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। অনেকেই মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেন। পরবর্তী সময় ভালো কোথাও ভর্তির সুযোগ পেলে আগের আসনটি ফাঁকা হয়ে যায়। এতে সরকারের অর্থ অপচয় হয়। এ বিষয়ে নানা আলোচনার পরে সবার পরামর্শে ১০ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় নিরুৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি নেই, এমন শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুকদের জন্য আগের মতো ৫ নম্বর কাটার সিদ্ধান্ত বহাল আছে। জানা গেছে, মেডিকেলের মোট আসনের ২০ শতাংশ বরাদ্দ থাকে জেলা কোটায় আবেদন করা শিক্ষার্থীদের জন্য। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এ সুযোগ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
মেডিকেল ভর্তিতে
প্রথম তানজিম সর্বা
এদিকে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তানজিম মুনতাকা সর্বা। তিনি পেয়েছেন ৯২.৫ নম্বর।