বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১

সাপ্তাহিক 'সৈনিকের' সম্পাদকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সাপ্তাহিক 'সৈনিকের' সম্পাদকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সাপ্তাহিক পত্রিকা 'সৈনিকের' ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। ভাষা আন্দোলনে পক্ষ নেওয়ায় ১২ ফেব্রম্নয়ারি পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী।

১৯৪৮ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে এই পত্রিকাটি প্রকাশ হয়। পত্রিকাটি বের করেন তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম। এটি ছিল মজলিসের ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র। তখন এর সম্পাদক ছিলেন প্রফেসর আব্দুল গফুর। ওই সময় আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদিত ইত্তেহাদ ছাড়া অন্য কোনো পত্রিকা ভাষা আন্দোলনকে তেমন সমর্থন করেনি। সৈনিক পত্রিকা বের হওয়ার আগে আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী সম্পাদিত সাপ্তাহিক ইনসাফ ভাষা আন্দোলনকে সমর্থন করত। সিলেট থেকে প্রকাশিত নওবেলাল পত্রিকাটি ভাষা আন্দোলনের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া মিলস্নাত, ইনসাফ প্রভৃতি পত্রিকা ভাষা আন্দোলনের সমর্থক ছিল। পাকিস্তান অবজারভার এবং আজাদেও ভাষা আন্দোলনের খবর মাঝেমধ্যে গুরুত্বসহকারে ছাপা হতো।

প্রফেসর আবুল কাসেমের আজিমপুর ১৯ নম্বর বাসা ছিল সৈনিক পত্রিকা ও তমদ্দুন মজলিসের অফিস। ভাষা আন্দোলন যেহেতু সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় তাই ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র সৈনিক পত্রিকাটিও প্রথম সরকারবিরোধী পত্রিকা হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে পরিচিতি লাভ করে। সরকারবিরোধী দলগুলোর বক্তব্য-বিবৃতি এবং কর্মকান্ড গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হতে থাকে এ পত্রিকায়।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন 'সৈনিক পত্রিকা' একই দিনে কয়েকটি সংস্করণ বের হয়েছে এবং তা নিমেষেই বিক্রি হয়ে যায়। ২২ ও ২৩ ফেব্রম্নয়ারি পত্রিকাটির তিনটি সংস্করণ বের করা হয়। মফস্বলেও ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সাড়া জাগায় পত্রিকাটি। শুধু প্রেসনোট ছাপার সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পত্রিকাটি সরকারি সে আদেশ মানেনি। সৈনিক পত্রিকার এ অবস্থানের ফলে সরকারের কোপানলে পড়ে পত্রিকাটি। প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম ও অধ্যাপক আব্দুল গফুরকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ সরকার।

এর ফলে ২৩ ফেব্রম্নয়ারি সৈনিক অফিস তথা প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের বাসভবন ঘেরাও করে পুলিশ। প্রফেসর আবুল কাসেম ও সৈনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর রাতের অন্ধকারে ১৯ নম্বর বাসার পেছনে গভীর কূপের ভেতর দিয়ে দেওয়াল টপকে শেখ সাহেব বাজারের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যান। প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সাল থেকে এই পত্রিকার সংবাদ প্রতিবেদন, সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয়, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, কার্টুন প্রভৃতি শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে