হাছান মাহমুদ-অজিত দোভাল বৈঠক

আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করবে ঢাকা-দিলিস্ন

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ভারত-বাংলাদেশ একযোগে কাজ করবে। এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পরে বিস্তারিত কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে। বুধবার সকালে দিলিস্নর সরদার প্যাটেল ভবনে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রীর ভারত সফরের প্রথম দিন এদিন সকালে এই বৈঠক হয়। পরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে গিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। এর আগে, দোভাল গত রোববার ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই সফর আগে থেকে স্থির ছিল না। সেই সফর নিয়ে কোনো দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। মঙ্গলবার রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে যেসব ভারতীয় রয়েছেন, তারা যেন এখনই সেখান থেকে অন্যত্র চলে যান। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যেসব ভারতীয় নাগরিক রাখাইন যাওয়ার কথা ভাবছেন, তারা যেন কেউ সেখানে না যান। ওখানকার পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। সব ধরনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এমনকি ল্যান্ড লাইনও অকেজো হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘোর আকাল শুরু হয়েছে। কাজেই সে দেশে না যাওয়াই শ্রেয়। কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ, ভারত ও চীন সীমান্তবর্তী মিয়ানমার এলাকায় সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। সামরিক শাসকের দখলে থাকা অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে প্রধানত ভারতের মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও বাংলাদেশের কক্সবাজার-বান্দরবান এলাকায়। মিয়ানমারের নাগরিকেরা পালিয়ে চলে আসছেন দুই দেশেই। গোলাগুলি আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। দুই দেশের সংকট একই ধরনের। এর মোকাবিলা যৌথভাবে করা যায় কি না, কিংবা করা গেলেও কতটা- সেসব বিষয় এবারের সফরে আলোচনায় থাকতে পারে। গত সপ্তাহে দোভালের ঢাকা সফরের পর হাছান মাহমুদের ভারত সফর সেই ধারাবাহিকতারই অঙ্গ। মিয়ানমার তৃতীয় পক্ষ হলেও বাংলাদেশ-ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সেখানকার পরিস্থিতি হবে প্রধান। বাংলাদেশ এমনিতেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। একই সমস্যায় ভারতও জর্জরিত। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নতুন করে অস্থিতিশীল করে তুলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বের পরিস্থিতি। অসামরিক ও সামরিক শরণার্থীর স্রোত বন্ধ করতে মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষেও মিয়ানমারের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়ে উঠেছে নতুন ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে মঙ্গলবার রাতে তিন দিনের সফরে ভারতে গেছেন হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশনে বক্তৃতাদান এবং একাধিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা রয়েছে তার। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকা থেকে দিলিস্ন পৌঁছার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্মিতা পন্ত।