সরকার নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রিই কাল হলো ব্যবসায়ী মামুনের জীবনে। মামুনের বিক্রি ভালো হওয়ায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আরেক মাংস ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খোকন। হত্যাকারী শেষ পর্যন্তর্ যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ঢাকার কারওয়ান বাজারর্ যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি আরও জানান, গত ৪ ফেব্রম্নয়ারি রাতে মাদারীপুর জেলার শিবচর থেকের্ যাব-৫ ওর্ যাব-৮ এর সদস্যরা সম্মিলিত অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মাংস ব্যবসায়ী মামুন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান ওরফে খোকনকে (৩৫)। তার পিতার নাম মৃত খোদা বক্স। বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা থানা এলাকায়।
র্
যাব কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি কিছু মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় অন্যায়ভাবে গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এতে গরুর মাংস সীমিত ও নিম্নআয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। গত বছর নভেম্বরে ঢাকার
শাজাহানপুরের খলিল নামের এক মাংস ব্যবসায়ী ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা শুরু করেন। এমন ঘটনায় সারাদেশে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। তাকে দেখে অনেক মাংস ব্যবসায়ী প্রায় একই দামে গরুর মাংস বিক্রি করা শুরু করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিতভাবে বৈঠক করে। বৈঠকে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে ৬৫০ টাকা। দেশের সব মাংস ব্যবসায়ীকে নির্ধারিত দামে গরুর মাংস বিক্রি করতে বলা হয়। অধিকাংশ ব্যবসায়ী সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ব্যবসা করছেন। এমন ঘটনায় বেশি দামে মাংস বিক্রেতারা কম দামে মাংস বিক্রেতাদের নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে।
র্
যাব কর্মকর্তা বলেন, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক রাজশাহী জেলার বাঘা থানাধীন আড়ানি বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মামুন ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রি শুরু করেন। এতে আশপাশের মাংস ব্যবসায়ীদের বিক্রি কম হচ্ছিল। স্বাভাবিক কারণেই কম লাভ হচ্ছিল তাদের।
র্
যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করা নিয়ে নিহত মামুনের সঙ্গে গ্রেপ্তার খোকনের ব্যাপক বাকবিতন্ডা হয়। সেদিন ছিল চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে খোকন মাংস কাটার ধারাল ছুরি দিয়ে মামুনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। আহত মামুনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই তার মৃতু্য হয়। এ ঘটনায় মামুনের ছোটভাই বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্
যাব কর্মকর্তা বলেন, নিহত মামুন গ্রেপ্তার খোকনের আত্মীয়। তারা একই বাজারে একসঙ্গে মাংস বিক্রি করত। ঘটনার পর পরই আত্মগোপনে চলে যায় খোকন। পালিয়ে প্রথমে রাজশাহীর তাহিরপুরে এবং পরে মাদারীপুরের শিবচরে আত্মগোপন করে। মাদারীপুরে এক বন্ধুর সহায়তায় ড্রেজারের শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিল খোকন। নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত খোকন। তার বিরুদ্ধে বাঘা থানায় ৪টি মামলা আছে। একাধিক মামলায় খোকন বিভিন্ন মেয়াদে জেলও খেটেছে।