ছয়জনের যাবজ্জীবন

সুবর্ণচরে ভোটের রাতে ধর্ষণ ১০ জনের মৃতু্যদন্ড

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের রাতে এক নারীকে দল বেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় ১০ জনকে মৃতু্যদন্ড দিয়েছেন আদালত -ফোকাস বাংলা
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের রাতে চলিস্নশোর্ধ এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের দায়ে ১০ জনকে মৃতু্যদন্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে দুই বছর করে কারাদন্ডের রায় দেওয়া হয়। সোমবার নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনাল-২ এর বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) সালেহ আহমদ সোহেল খান জানান, আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। যাদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে, জরিমানা না দিলে তাদের আরও ২ বছর কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। আসামিদের মধ্যে মৃতু্যদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. রুহুল আমিন, মো. হাসান আলী বুলু, মো. সোহেল, স্বপন, ইব্রাহিম খলিল, আবুল হোসেন আবু, মো. সালাউদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মুরাদ ও মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি। আর মো. হানিফ, মো. চৌধুরী, মো. বাদশা আলম বসু, মোশারফ এবং মো. মিন্টু ওরফে হেলালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। দন্ডিতদের মধ্যে মো. মিন্টু ওরফে হেলাল ঘটনার পর থেকেই পলাতক। রায়ে বিচারক বলেন, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল আমিন এবং মো. হাসান আলী বুলুর প্রত্যক্ষ ইন্ধনে এবং অংশগ্রহণে ধর্ষণের ওই ঘটনা ঘটে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানান, এ মামলায় যদি প্রত্যেক আসামির শাস্তি না হয় তাহলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। আসামিরা শুধু ভিকটিমের ক্ষতি করেনি, পুরো রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছে। এ রায়ের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে অপরাধ প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন আদালত। উলেস্নখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে নারীকে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তার অভিযোগ ছিল- ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া আসামিপক্ষ চারজন সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করেন। গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে ১৬ জানুয়ারি রায়ের দিন নির্ধারণ করেন বিচারক। তবে পরে রায় পিছিয়ে ৫ ফেব্রম্নয়ারি নতুন তারিখ রাখা হয়।