দেশের গড় তাপমাত্রা আরও একটু বেড়েছে। এরই মধ্যে বৃষ্টি হয়েছে দু'দিন। এখনো মেঘলা রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার আকাশে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ অবস্থার বৃষ্টির প্রবণতা আজ শনিবার থেকে কমে যাবে। এর দুইদিন পর মৃদু আকারে শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে যা দুই থেকে তিনদিন স্থায়ী হতে পারে। এ ছাড়া মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকাসহ দেশের সাত বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এদিকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শনিবার চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও এটি দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে পেস্নন চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ ও সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ফেব্রম্নয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মাসের প্রথমার্ধে দেশের উত্তর, পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়বে।
জানুয়ারি মাসে ৩ ধাপে দেশের অনেক জায়গায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। গত ২৮ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, জানুয়ারি মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিক গড়ের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এই সময়ের গড়ের সমান ছিল।
তিনি জানান, ফেব্রম্নয়ারি মাসজুড়ে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। মাসের শেষে কোথাও-কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপের আভাস নেই।
এদিকে গত তিন দিনে খুলনায় ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। তবে ৩-৪ দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকতে পারে। তবে ৪/৫ দিন পর ফের বৃষ্টির আভাস রয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, শুক্রবার রাতেও খুলনায় বেশ বৃষ্টি হয়েছে। রেকর্ড হয়েছে ১১ মিলিমিটার। আর শুক্রবার খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৬ ফেব্রম্নয়ারি ফের বৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, বৃষ্টিপাতের রেকর্ড অনুযায়ী ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে খুলনায় ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। ২০১৫ সালে ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। আর ২০২৪ সালে এসে জানুয়ারিতে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে কোনো বৃষ্টি ছিল না। গত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই জানুয়ারি মাস ছিল বৃষ্টিহীন। ২০০৫ সালে ১৫ মিলিমিটার, ২০০৮ সালে ৬৭ মিলিমিটার, ২০০৯ সালে এক মিলিমিটার, ২০১২ সালে ৬৬ মিলিমিটার, ২০১৩ সালে এক মিলিমিটার, ২০১৫ সালে ৪১ মিলিমিটার, ২০২২ সালে ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল।
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, গত ২০ বছরের মধ্যে এ বছর খুলনায় তৃতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল গত ২৩ জানুয়ারি। আগে খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল ২০০৩ সালে ৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২০২১ সালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২২ সালে ছিল ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২০২৩ সালে ছিল ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।