শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৬০ হাজার টন ইউরিয়া ও এক কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

ব্যয় বাড়ল হাওড়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে পরামর্শক সেবার
যাযাদি ডেস্ক
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
৬০ হাজার টন ইউরিয়া ও এক কার্গো এলএনজি কিনছে সরকার

রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কাতার ও সৌদি আরব থেকে দুটি প্রস্তাবে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একইসঙ্গে হাওড়ে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে পরামর্শক সেবার ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে।

বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন সরকারের অধীনে এটি সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান বলেন, 'শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন

কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিন্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৩৩০ দশমিক ৮৩ মার্কিন ডলার। এছাড়া অন্য এক প্রস্তাবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে একই চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের সার্বিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৩তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৩৪৭ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার। সার কেনার দুটি প্রস্তাবে ব্যয় হবে ২২৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।'

তিনি বলেন, 'সিঙ্গাপুরের এমএস ভিটল এশিয়া থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে মোট খরচ হবে ৪২৯ কোটি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬০ টাকা। এর আগে প্রতি এমএমবিটিইউ-এর দাম ছিল ১০ দশমিক ৮৮ মার্কিন ডলার।'

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'এর আগে আজ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দুটি বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। একটি নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত, অন্যটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।'

এছাড়া বিদু্যৎ, জ্বালানি দ্রম্নত সরবরাহ আইনের আওতায় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্সেস এগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওমানকে অন্তর্ভুক্ত করানোর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা। এখন থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয়ের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২২টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড (ওকিউটি) নামে প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি জানান, 'এলএনজির মূল্য অস্বাভাবিক বাড়ায় ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ এর জানুয়ারি পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় বিদু্যৎ উৎপাদন, ক্যাপটিভ বিদু্যৎ ও শিল্প খাতে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। ফলে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার দাবি ওঠে। এরপর 'বিদু্যৎ ও জ্বালানির দ্রম্নত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধনী ২০২১)'- এর আওতায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আবার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। দেশে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য স্পট মার্কেট থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালে জুন পর্যন্ত মোট ১৩ কার্গো এলএনজি কিনতে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এটি ২০২৪ সালের তৃতীয় এলএনজি আমদানির ক্রয় প্রস্তাব।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, 'হাওড় এলাকায় বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প (বাপাউবো অংশ) শীর্ষক প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা, নকশা, তত্ত্বাবধান এবং অন্যান্য সম্পর্কিত পরিষেবা কাজের পরামর্শক সেবার ভেরিয়েশন প্রস্তাব এসেছিল। ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই কোং লিমিটেডের দ্বিতীয় সংশোধিত চুক্তি (মূল চুক্তির সঙ্গে অতিরিক্ত চুক্তি) সম্পাদনের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০৮ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ৪৬০ টাকা। সেখানে মূল চুক্তি মূল্য ছিল ৮৮ কোটি ৩২ লাখ ২৮ হাজার ১৪০ টাকা। সে হিসাবে ব্যয় বাড়ল ২০ কোটি তিন লাখ ৯২ হাজার ৩২০ টাকা।'

বৈঠকে অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো বিদু্যৎ ও জ্বালানির দ্রম্নত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর (২০২১ সনের সর্বশেষ সংশোধনসহ) আওতায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জার্মানির আইএলএফ কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্সের সঙ্গে দ্বিতীয় সাপিস্নমেন্টারি চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব। এতে মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৭০ লাখ ৮ হাজার ৮০৯ টাকা।

এছাড়া বিদু্যৎ ও জ্বালানির দ্রম্নত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর (২০২১ সনের সর্বশেষ সংশোধনসহ) আওতায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিত (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন শীর্ষক প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার সিপিপিইসির সঙ্গে ৪৫ সাপিস্নমেন্টারি চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৮২ কোটি ৮২ লাখ ৩১ হাজার ৩৩০ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে