বাংলাদেশে গ্রেপ্তার সব ব্যক্তির জন্য একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারও বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক তার প্রশ্নে বলেন, দ্য ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার নির্বাচনে রাশিয়া ও চীনের পাশাপাশি ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি কানাডীয় তদন্তে উঠে এসেছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের নির্বাচনেও ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি সামনে এসেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে প্রকাশ্যে বলেছেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারের নির্বাচনে তাদের জয়ের ক্ষেত্রে ভারতের সমর্থন ছিল। সমালোচকদের দাবি, ভারতের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উন্নয়ন থেকে পিছু হটছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের মন্তব্য কী?
জবাবে মিলার বলেন, কানাডার যে তদন্তের কথা বলা হলো, সে বিষয়ে তার কিছু বলার নেই। এটা কানাডা বলতে পারবে। তিনি বাংলাদেশ ও দেশটির গণতন্ত্রের বিষয়ে কথা বলবেন; যেমনটা তারা আগেও অনেকবার বলেছেন। তারা বাংলাদেশ ও অন্যান্য বিষয়- শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছেন। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রীয় বিষয়। গণতান্ত্রিক নীতিকে এগিয়ে নিতে তারা বাংলাদেশ
সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবেন, যা সব বাংলাদেশির শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার চাবিকাঠি।
একই সাংবাদিক আরেক প্রশ্নে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন অবিলম্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ৭ জানুয়ারির ভুয়া নির্বাচন করার জন্য সরকার ২৫ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের মধ্যে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা আছেন। বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি ঘোষণা করেছিল। এই নীতির প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র ক্ষুণ্নের জন্য বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
জবাবে মিলার বলেন, বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা তিনি আগে থেকেই বলছেন। এই নির্বাচনকে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু মনে করেন না। নির্বাচন সামনে রেখে হাজারো রাজনৈতিক বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার নিয়েও তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মিলার আরও বলেন, তিনি দুটি বিষয় বলবেন। গ্রেপ্তার সবার জন্য একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নাগরিক জীবনে অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এ বিষয়কে এগিয়ে নিতে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবেন।