মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় এই লড়াইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক, এতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রম্ন সীমান্ত এলাকার মানুষ মর্টার শেল এবং গুলাগুলির আওয়াজে আতঙ্কিত রয়েছে।
এদিকে সীমান্ত পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রম্ন সীমান্ত এলাকার ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১টি মাদ্রাসা।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ক্রমে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় এবং মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একেবারেই সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এগুলো বন্ধ করা হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রম্ন হেডম্যানপাড়া চাকমাপলস্নীর প্রধান কানন চাকমা বলেন, মিয়ানমারের সংঘর্ষে গোলাগুলির কারণে আমরা খুবই ভয়ে আছি। আমার পলস্নীতে ২৭টি পরিবারের বসবাস। সবাই এখন ভীত।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ওপারে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে এপারে গুলির আওয়াজে স্থানীয়দের সমস্যা হচ্ছে। এগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টরা তৎপর রয়েছে যাতে আমাদের এ পাশে কোনো সমস্যা না হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, যারা সীমান্তে বসবাস করছে তাদের বিরূপ কোনো রিপোর্ট আসেনি। আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে মানুষকে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। এরকম প্রস্তুতি আমাদের আছে।
এদিকে রোববার বিকালে বিজিবি'র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান কক্সবাজার ও বান্দরবানের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সীমান্ত এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।