শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ

জিএম কাদের বিরোধী দলের নেতা, আনিসুল উপনেতা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
জিএম কাদের বিরোধী দলের নেতা, আনিসুল উপনেতা

দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দল কারা হবে সেই আলোচনার মধ্যে জাতীয় পার্টির নেতা জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা এবং আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রোববার এ সংক্রান্ত সংসদ সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপনের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

সংসদ সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 'সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত ক্ষেত্রমত দল বা অধিসঙ্ঘের নেতা রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে (জিএম কাদের) সংসদে কার্যপ্রণালি অনুযায়ী বিরোধীদলীয় নেতা ও চট্টগ্রাম-৫ আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে স্পিকার স্বীকৃতি দিয়েছেন।'

এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠকে এ সংক্রান্ত দলীয় সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে দলটি। এরপর তা স্পিকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ভোটে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়েছে। দলগতভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১টি আসন পায় জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্ররা ৬২টি আসন পেয়েছে।

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী এবং উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। 'বিরোধীদলীয় নেতা এবং উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) অধ্যাদেশে তাদের সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা রয়েছে। সংসদ ভবনে বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার পৃথক কার্যালয়ও রয়েছে।

আইনে কি বলা আছে : সংসদে বিরোধী দল বা বিরোধী দলের নেতা নির্বাচনের

বিষয়ে সংবিধানে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। কেবল সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে 'বিরোধীদলীয় নেতা' উলেস্নখ আছে। এতে বলা হয়েছে, 'বিরোধী দলের নেতা' অর্থ স্পিকারের বিবেচনা মতে যে সদস্য সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চসংখ্যক সদস্য লইয়া গঠিত ক্ষেত্রমত্রে দল বা অধিসংঘের নেতা।

এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাশেদা রওনক খান বলেন, বিরোধী দল হতে সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ না। সংসদে বিরোধী দল থাকবে সরকারের সমানে সমান। তারা গঠনমূলক বিরোধিতা করবে। তার জন্য আসলে শক্তি সামর্থ্য বা রাজনৈতিক দূরদর্শিতা প্রয়োজন।

১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাসদ রবের বিরোধীদল নির্বাচিত হওয়ার উদাহরণ টেনে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ন্যায্যভাবে ১১ জনে বিরোধী দল হয় না, সেক্ষেত্রে অন্যদের সমর্থন নিয়ে বিরোধী দল হতে পারে।'

জাতীয় পার্টির প্রস্তুতি

২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিতর্কিত একটি নির্বাচনের মাধ্যম যখন সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ, তখন ৩৪ আসন নিয়ে বিরোধীদলে বসেছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি।

এরপর ২০১৮ সালে ২২টি আর এবার ঠিক তার অর্ধেক আসন নিয়ে নিয়ে বিরোধীদলে বসতে সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে দলটি।

এই ১১ জনই নিয়েই কি হবে বিরোধী দল?

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার কার্যালয়ে এ নিয়ে বৈঠকে বসে জাতীয় পার্টি। বৈঠকে দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ হিসেবে প্রস্তাব করা হয়।

তখন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছিলেন, 'ভারতের লোকসভার বিধানে আছে বিরোধী দল হতে ১০ শতাংশ আসন লাগে। আমাদের পার্লামেন্টে এমন কিছু উলেস্নখ নাই। যেহেতু লেখা নাই, সেহেতু স্পিকার ১১ জন হলেও দিতে পারেন, ৪০ জন হলেও দিতে পারেন।'

তিনি বলেন, 'গত টার্মেও আমরা বিরোধীদলের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের দু-একজন সদস্যের কথাবার্তায় দলের মধ্যেও আপত্তি ছিল। আমরা অতীতে যেভাবে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের চেষ্টা করেছি, ভবিষ্যতেও সেভাবে পালন করব।'

তিনি বলেন, কার্যবিধি অনুযায়ী বিরোধী দলের স্বীকৃতি দেওয়া স্পিকারের ওপর নির্ভর করে। তিনি স্বীকৃতি দিলে বিরোধীদলীয় নেতা উপনেতা সংসদ থেকে এক ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে। স্বীকৃতি না দিলে সুযোগ-সুবিধা পাবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে