শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১
আফ্রিকান নাগরিক গ্রেপ্তার

শাহজালালে ১০০ কোটি টাকার কোকেন আটক

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো

দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। জব্দ করা মাদকদ্রব্যের মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। আফ্রিকার দেশে মালাও-এর এক নারী ৮ কেজি ৩০০ গ্রামের এই কোকেনের চালানটি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

বুধবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো (৩৫) নামের সেই নারীকে কোকেনের এই চালানসহ গ্রেপ্তার করা।

ডিএনসি জানায়, কোকেনের এই চালানটি আফ্রিকার দেশ মালাও অথবা ইথিওপিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল চালানটি পাচার করার জন্য। কারণ এই পরিমাণ কোকেনের চাহিদা বাংলাদেশে নেই।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁও-এ অবস্থিত ডিএনসির উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) তানভীর মমতাজ।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে কঠিন অবস্থায় আনা কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান এটি। জব্দ করা ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেনের দাম আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা।

এর আগে ২০১৪ সালে সাড়ে তিন কেজি কোকেন উদ্ধার হয়েছিল কঠিন অবস্থায়। এছাড়া ২০১৫ সালে ১০৭টি ড্রামে সূর্যমুখী তেলের সঙ্গে মিশিয়ে আনা কোকেনের একটি চালান ধরা পড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর মধ্যে একটি ড্রাম পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল, ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার তেলের এক-তৃতীয়াংশই তরল কোকেন।

ডিএনসি পরিচালক তানভীর মমতাজ বলেন, মাদকের একটি বড় চালান আসছে বলে খবর ছিল তাদের কাছে। সেজন্য তাদের গোয়েন্দা দল গত দু'দিন ধরে কাজ করছিল বিমানবন্দরে। এর অংশ হিসেবে বুধবার রাতে আফ্রিকা থেকে আসা কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটের যাত্রীদের ওপর নজর রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, 'মালাউই'র ওই নাগরিককে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার হাতে থাকা একটি ফোল্ডারে ১ কেজি কোকেন পাওয়া যায়।

এরপর তার লাগেজ তলস্নাশি করা হয়, কিন্তু ভেতরে কিছু ছিল না। স্ক্যানেও কিছু ধরা পড়ছিল না। কিন্তু লাগেজের ওজন দেখে সন্দেহ হওয়ায় পরীক্ষা করে দেখা যায়, লাগেজের তলায় বিশেষ ব্যবস্থায় কার্বন পেপার

দিয়ে মোড়ানো আছে ৭ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন।'

নোমথানডাজো তোয়েরা সোকোর আগেও জুতা ও পোশাক পণ্যের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এবারও তিনি শুরুতে ব্যবসার কাজে ঢাকায় আসার কথা বলেন মাদক দ্রব্যনিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই কোকেন চোরাচালানের সঙ্গে বাংলাদেশের একজন এবং বিদেশি কয়েকজনের তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।

অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ওই নারীর সঙ্গে বাংলাদেশের একজন যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। ঢাকায় নেমে উত্তরায় একটি আবাসিক হোটেলে ওঠার কথা ছিল ওই নারীর। বাংলাদেশে একজন ওই হোটেল কক্ষ 'বুক' করেছিলেন। ওই নারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে সেই ব্যক্তির ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।'

বাংলাদেশে মাদক হিসেবে কোকেনের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম। বিভিন্ন সময়ে কোকেনের যেসব চালান বাংলাদেশে ধরা পড়েছে সেগুলোর চালান অন্য কোনো দেশ ছিল বলে মাদক দ্রব্যনিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ধারণা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের দেশি-বিদেশি কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশকে 'ট্রানজিট' হিসেবে ব্যবহার করে কোকেন চোরাচালানের চেষ্টা করছে। গ্রেপ্তার নারীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে