রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত যুদ্ধবন্দিসহ নিহত ৭৪

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত যুদ্ধবন্দিসহ নিহত ৭৪

রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল বেলগরোদ অঞ্চলে ইয়াবেস্নানোভো গ্রামের কাছে রুশ সামরিক বাহিনীর একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ইউক্রেনের ৬৫ যুদ্ধবন্দিসহ ৭৪ আরোহী ছিলেন। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা সবাই নিহত হয়েছেন। খবর: বিবিসি, রয়টার্স ও রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইলিউশিন-৭৬ পরিবহণ বিমানটিতে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ৬৫ জন বন্দি ছিলেন, যাদের বিনিময় করার জন্য নেওয়া হচ্ছিল। এ ছাড়া ওই বিমানে ছয়জন ক্রু এবং তিনজন নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। সামরিক বাহিনীর বিমানটি ইউক্রেইন সীমান্তের কাছে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ইয়াবেস্নানোভো গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হয়।

রাশিয়ার স্থানীয় বেলগরোদ চ্যানেলে প্রচারিত একটি ভিডিওর বরাতে বিবিসি আরও জানায়, এতে দেখা যায়, একটি উড়োজাহাজ দ্রম্নত নেমে আসে এবং মাটিতে বিধ্বস্ত হওয়ার পর তাতে আগুন ধরে যায়। রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য এবং অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আন্দ্রেই কারতাপোলভ বলেন, 'উড়োজাহাজটি তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে তিনি কোথা থেকে এ তথ্য পেয়েছেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি।'

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটিতে কারা ছিলেন তা স্বাধীনভাবে যাচাই করে দেখতে পারেনি। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া এবং ইউক্রেইন নিয়মিত বন্দি বিনিময় করে। এ বিষয়ে জানতে রয়টার্স থেকে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন একটি চ্যানেল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করা

হয়েছে। যার সত্যতা যাচাই করে দেখেছে রয়টার্স। ভিডিওতে দেখা যায়, বেলগরদ অঞ্চলের ইয়াবেস্নানোভো গ্রামের কাছে আকাশ থেকে বড় একটি উড়োজাহাজ মাটিতে পড়ছে এবং সেটি বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে গেছে। সামরিক ওই উড়োজাহাজটির সব আরোহী মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ভিয়াচেস্স্নাভ গস্নাদকভ।

টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি লেখেন, 'একটি পরিবহণ বিমান কোরোচানস্কি জেলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। সেটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি মাঠে পড়েছে। আরোহীরা সবাই মারা গেছেন।'

পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে এবং উদ্ধার কাজ চলছে। জরুরি পরিষেবাগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পেস্নন বিধ্বস্তের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি জানায়, সামরিক বাহিনীর আইএল-৭৬ মডেলের একটি পরিবহণ পেস্নন বুধবার (২৪ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে পশ্চিম বেলগরোদ অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে বার্তাস সংস্থাটি আরও জানায়, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে প্রায় এক মিনিটের ব্যবধানে দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল।

এদিকে রাশিয়ার ডুমা প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আন্দ্রেই কার্তাপোলভ চেম্বারের একটি সভায় দাবি করেছেন, আসন্ন যুদ্ধবন্দি বিনিময় সম্পর্কে জানত ইউক্রেন সরকার। তা সত্ত্বেও বিমানটিতে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন প্যাট্রিয়ট কমপেস্নক্স অথবা জার্মান আইআরআইএসটি থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল।

এ ঘটনার পরে যুদ্ধবন্দি বহনকারী দ্বিতীয় বিমানটি ফিরে যেতে সক্ষম হয় বলে যোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফকে উদ্ধৃত করে ইউক্রেনস্ক প্রাভদা ওয়েবসাইটের খবরে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি রাশিয়ার এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহন করছিল। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বন্দিদের কথা উলেস্নখ করা হয়নি।

এ ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানালেও বলেছেন যে, ক্রেমলিন এ বিষয়ে অবগত রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে