ঢাকার বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃতু্যর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুলস্নাহর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ দিন রিটকারী পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
অ্যাডভোকেট মাসুম পরে বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি এই বেঞ্চই সাত দিনের মধ্যে তদন্ত
প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিল। প্রতিবেদন না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার সময় বেঁধে দিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর বয়সি আয়ানকে খতনা করানোর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি তার। পরে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি সেখানেই মৃতু্য হয় শিশুটির।
আয়ানের বাবা শামীম আহামেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন, অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয় সেখানে।
পরে জানা যায়, যথাযথ নিবন্ধন ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। এ কারণে রোববার ওই হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
আয়ানের মৃতু্যর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় সেখানে। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল এবং নতুন রোগী ভর্তি না করার নির্দেশনা চেয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারী পক্ষ।
গত ১৪ জানুয়ারি এই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদেশ দেন হাইকোর্ট। শিশু আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় আদেশে।
পাশাপাশি দেশের সব অনুমোদিত ও অননুমোদিত হাসপাতাল-ক্লিনিকের তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানান, এ রিট মামলায় পরে শিশু আয়ানের বাবা পক্ষভুক্ত হন এবং পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে এ মামলায়।