বিপিএলে দশম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিলস্নাকে হারিয়ে আসরের শুরুতেই চমক দিয়েছিল দুর্দান্ত ঢাকা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে হতাশার পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ঢাকা। এতে তিন ম্যাচে দুই জয়ে ঢাকা পর্ব শেষ করেছে চট্টগ্রাম।
কুয়াশায় ঢাকা দিনে মন্থর উইকেটে দুর্দান্ত ঢাকাকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন কনকাশন বদলি নামা লাসিথ ক্রসপুল। তবে লড়াই শেষ পর্যন্ত হয়নি। তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে ভালো শুরুর পর শেষ দিকে ঝড় তুলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে দ্বিতীয় জয় এনে দিয়েছেন নাজিবুলস্নাহ জাদরান। তবে ম্যাচসেরা হয়েছেন তানজিদ হাসান।
সোমবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৬ রানের পুঁজি পায় দুর্দান্ত ঢাকা। জবাব দিতে নেমে ১১ বল হাতে থাকতেই ৬ উইকেটের বড় জয় পায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
সহজ লক্ষ্যকে সামনে রেখে শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস বড় করতে পারেনি চট্টগ্রামের ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দো। ৬ বলে ১২ রান করে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি উইকেটরক্ষক ব্যাটার ইমরানুজ্জামানও। তবে শাহাদাত হোসেন দিপুকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তানজিদ হাসান তামিম। ৩১ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন শাহাদাত। ওসমান কাদিরের বলে ক্যাচ আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ৪০ বলে ৪৯ রান করে তাসকিনের বলে ক্যাচ আউট হন এই বাঁহাতি ওপেনার। শেষ দিকে শুভাগত হোমকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন আফগান তারকা নাজিবুলস্নাহ জাদরান। শুভাগতর ১১ বলে ৭ রান এবং জাদরানের ১৮ বলে ৩০ রানের দুর্দান্ত ফিনিসিংয়ে ১১ বল ও ৬ উইকেট হাতে
থাকতেই জয়ের বন্দনে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রাজধানীর দলটি। ৯ বল খেলে এক রান করে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন লংকান ব্যাটার দানুশকা গুণাথিলাকা। এরপর ৯ বলে ৯ রান করে আল আমিনের বলে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ হাসান।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। ৬ বলে শূন্য রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মোহাম্মদ নাঈম ফেরেন ৮ রান করে। অন্যদিকে এই ম্যাচে সবার নজর ছিল প্রথমবার বিপিএল খেলতে আসা অজি ব্যাটার অ্যালেক্স রোসের ওপর। তবে বিপিএলের শুরুটা রাঙাতে পারেন তিনি। ৯ বলে ১১ রান করে মিরপুরে পিচের চরিত্র বুঝে ওঠার আগেই রান আউটে ফাঁদে পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। দলীয় ৩৩ রানে টপ অডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। এরপর গুনাথিলাকার বদলি হিসেবে খেলতে নামা লাসিথ ক্রসপুলেকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন ইরফান শুক্কুর। দুজনের নিয়ন্ত্রণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকে দুর্দান্ত ঢাকা। তবে ফিফটি পূরণের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন ক্রসপুলে। ৩১ বলে ৪৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
তিন রান করে চাতুরাঙ্গা আউট হলে ২৬ বলে ২৭ রান করে তাকে সঙ্গ দেন শুক্কুর। বেলাল খানের বলে বোল্ড আউট হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তাসকিনের ৯ বলে ১৫ রান এবং ওসমান কাদিরের অপরাজিত ৭ বলে ৫ রানে ভর করে ১৩৬ রানের লড়াকু পুঁজি পায় দুর্দান্ত ঢাকা।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে আল আমিন ও বিলাল খান দুটি করে উইকেট নেন। এ ছাড়াও শুভাগত হোম, নাহিদুজ্জামান ও কার্টিস ক্যাম্ফার একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দুর্দান্ত ঢাকা: ২০ ওভারে ১৩৬/৮ (গুনাথিলাকা আহত অবসর ১, নাঈম ৮, সাইফ ৯, মোসাদ্দেক ০, রস ১১, ইরফান ২৭, ক্রুসপুল ৪৬, চাতুরাঙ্গা ৩, কাদির ৫*, তাসকিন ১৫, শরিফুল ১*; শুভাগত ১/২০, আল আমিন ২/১৫, শহিদুল ০/৩১, বিলাল ২/২৮, নিহাদ ১/২৯, ক্যাম্পার ১/১০)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৮.২ ওভারে ১৩৭/৪ (আভিশকা ১২, তানজিদ ৪৯, ইমরানউজ্জামান ১, শাহাদাত ২২, নাজিবউলস্নাহ ৩২*, শুভাগত ৭*; শরিফুল ২/৪০, মোসাদ্দেক ০/১১, তাসকিন ১/২৬, সানি ০/১৪, চাতুরাঙ্গা ০/২৬, কাদির ১/১৬)।
ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: তানজিদ হাসান।