শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

শীতজনিত রোগ ও আগুন পোহাতে গিয়ে মৃতু্য বাড়ছে

দুই মাসে ৬২ জনের মৃতু্য, রোগী সামলাতে হিমশিম চিকিৎসকরা, শয্যার চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ রোগী ভর্তি
বীরেন মুখার্জী
  ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শীতজনিত রোগ ও আগুন পোহাতে গিয়ে মৃতু্য বাড়ছে

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বেড়েছে। হাসপাতালগুলোয় নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক। কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, দিনাজপুর, শরীয়তপুর, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জসহ বেশকিছু জেলায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কোনো কোনো হাসপাতালে শয্যার চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। সেই সঙ্গে বাড়ছে শিশুমৃতু্য ও আগুন পোহাতে গিয়ে মৃতু্য।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুসারে গত ১৫ নভেম্বর থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ৬২ জনের মৃতু্য হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ছয়জন, ময়মনসিংহ বিভাগে তিনজন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩০ জন, রাজশাহী বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে চারজন, বরিশাল বিভাগে একজন ও সিলেট বিভাগে ১৭ জন। এ ছাড়া এ সময়কালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন প্রায় আড়াই ৫

লাখ রোগী। তবে শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে মৃতু্যর সংখ্যা কোথাও সংরক্ষণ করা হয় না।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শীতজনিত রোগে মৃতু্যর যে তথ্য দিয়েছে, সারা দেশে এই সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ একই সময় শীতের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়েও অগ্নিদগ্ধ হয়ে সারা দেশে মৃতু্যর ঘটনা বাড়ছে।

রাজধানীর শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাসান অমি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'রোগীর চাপ বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে জরুরি বিভাগে দৈনিক ৬০০ থেকে ৮০০ রোগীর সেবা দেওয়া হতো। বর্তমানে সেখানে ১ হাজার রোগী সেবা নিচ্ছেন, যাদের বড় অংশ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। এই হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ১৯ রোগী ভর্তি হচ্ছেন।'

তবে ঢাকায় শীতের তীব্রতা বাড়লেও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ কম। আইসিডিডিআর,বির এক কর্মকর্তা জানান, গত ডিসেম্বরে শীতজনিত রোগী বেশি ছিল। এ সময় দৈনিক ৮০০ রোগী সেবা নিয়েছে। তবে এখন দৈনিক রোগী কমে সাড়ে পাঁচশ হয়েছে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুলস্না বলেন, শুধু হাসপাতালে নয়, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে শীতজনিত রোগীর চাপ অনেক। শীত ও বায়ুদূষণজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে আগের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ। শিশুদের অনেকে আসছে সর্দি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, হাঁচি-কাশি নিয়ে। একটা অংশের তীব্র জ্বর, গলাব্যথা ও কাশি। দেখা গেছে, এ ধরনের রোগীদের কোনো সংক্রমণ নেই, জ্বরও নেই। কিন্তু নাক বন্ধ থাকায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, নবজাতক হলে দুধ টেনে খেতে পারে না। বাচ্চা ঘুমাতে পারে না, কান্নাকাটি করে। বাচ্চারা শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময় বাচ্চাদের অ্যাজমাও বেড়ে যাচ্ছে। ধূলিকণা নিশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রে গিয়ে ছোট-বড় সবারই ক্রনিক কাশি হচ্ছে। এসব সমস্যা শৈত্যপ্রবাহের সময় বেশি হয়।

বরিশাল হাসপাতালে শয্যাসংকট

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যাসংকটের কারণে শিশুদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। চলতি মাসের দুই সপ্তাহে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। এ সময় মারা গেছে সাত শিশু। বিভাগের ছয় জেলার মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে ভোলায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালের বহির্বিভাগে চার শিশু বিশেষজ্ঞ প্রতিদিন সেবা দিচ্ছেন চার শতাধিক রোগীকে। শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি থাকছে পাঁচগুণের বেশি।

এবার এ অঞ্চলে শীত কিছুটা আগাম এলেও শীতের আচরণ ছিল খেয়ালি। নভেম্বরের শুরুতে এ অঞ্চলে মৃদু শীত অনুভূত হলেও তাপমাত্রা কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, আবার কমে যাওয়ার প্রবণতা ছিল। ফলে দিনে গরম ও শেষরাতে বেশ ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করেছে। কিন্তু নতুন বছরের জানুয়ারির ১০ তারিখের পর তা তীব্রতা পায়। শীতের এমন হেঁয়ালি আচরণের কারণে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব এবার বেশি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড, শিশুসহ সব ওয়ার্ড রোগীতে ঠাসা। শয্যা না পেয়ে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে আছেন। একইভাবে হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীদের ভিড় দেখা যায়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ওয়ার্ড ছাড়াও বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪০০ শতাধিক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক রোগী। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডটি ৪৫ শয্যার হলেও সেখানে রোগী আছে কয়েকগুণ বেশি।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, 'শীত মৌসুমের শুরু থেকেই ঠান্ডাজনিত রোগী বেড়েছে। শিশু ওয়ার্ডের শয্যার সংখ্যা অপ্রতুল। এরপরও অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিশু বিভাগে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।'

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক উত্তম কুমার সাহা বলেন, 'শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে অথবা যদি ভালো খেতে না পারে, তাহলে শিশুকে দ্রম্নত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।'

রংপুরে দিনে গড়ে ৩ শিশুর মৃতু্য

বৈরী আবহাওয়ায় ঠান্ডাজনিত কারণে রংপুরে বেড়েছে নানা রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ রোগী বেড়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বেড না পেয়ে মেঝেতে জায়গা হয়েছে তাদের। ভর্তি হওয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিনই শিশু ওয়ার্ডে ভর্তির রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি। গত ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে ২২ শিশুর মৃতু্য হয়েছে। একই সময় মারা গেছেন অন্তত ১০ জন বয়স্ক রোগী। এ ছাড়া ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১৫ শিশু। তবে হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্টার খাতায় শীতজনিত রোগে মৃতু্যর আলাদা কোনো তথ্য নেই। এমনকি শিশু বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরাও এ বিষয়ে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে এত বড় হাসপাতালে শিশুর মৃতু্যর এই সংখ্যাকে স্বাভাবিক মৃতু্যর ঘটনা বলছেন কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান সাংবাদিকদের বলেন, 'শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমান সময়ে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছে।'

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগেও একইভাবে রোগীদের ভিড় দেখা গেছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে ৩০০ শিশু। সেই সঙ্গে বয়স্ক ব্যক্তি। বহির্বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকট থাকায় গুরুতর অসুস্থ ছাড়া অন্যদের শুধু ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহীতে বাড়ছে ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগী

শীত বাড়ায় রাজশাহীতে ঠান্ডাজনিত নানান রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বর্তমানে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বছরের স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দুই-তিনগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকেই রামেক হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ভিড় করছেন।

শীতজনিত রোগী দিন দিন বাড়ছে উলেস্নখ করে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইএমও) মো. বিলস্নাল হোসেন বলেন, 'তীব্র শীতের কারণে এখন শিশুরাই বেশি ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বয়স্কদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সিরাও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে আসছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট এবং হৃদরোগে ভুগছেন।'

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, 'রাজশাহীর উপজেলা পর্যায়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আর ভর্তি রোগীর চেয়ে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যাই এখন বেশি। তবে পরিস্থিতি যে খুব খারাপ, এমনটা নয়। প্রতি বছরই শীতের সময় রোগী বাড়ে। তাই তাদের সে রকম ব্যবস্থাপনাও থাকে, এবারও আছে।'

ডায়রিয়া বেড়েছে সিলেটে

শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে সিলেটে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর হার দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে বেশিরভাগ শিশু।

সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সগুলোতে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। জেলার ১৩ উপজেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুসহ অন্যান্য বয়সিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ১৩৭টি মেডিকেল টিম।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সিলেটে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) বা শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগে কানাইঘাটে একজন ও গোয়াইনঘাটে একজনের মৃতু্যর তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া শীতজনিত রোগে কারও মৃতু্য হয়নি।

এ সময় পর্যন্ত শিশুসহ বিভিন্ন বয়সি এক হাজার ১২২ জন একই রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এ সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে দুই হাজার ২৮৬ জন। এর মধ্যে সদরে ২২, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ৫৭, বিশ্বনাথে ১৫১, বালাগঞ্জে ১৫৪, ওসমানীনগরে ৩৪, ফেঞ্চুগঞ্জে ২৬০, গোলাপগঞ্জে ১৮৭, বিয়ানীবাজারে ৯৯, জকিগঞ্জে ৩৪৩, কানাইঘাটে ৩৪৩, গোয়াইনঘাটে ২০০, জৈন্তাপুরে ২৮২ ও কোম্পানীগঞ্জে ১৫১ জন চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, 'শীতে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এজন্য প্রথমে প্রয়োজন সতর্কতা। হাসপাতালে শিশু, মেডিসিন ওয়ার্ডসহ প্রায় সবকটি ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি। বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। আমরা আন্তরিকভাবে চিকিৎসা দিচ্ছি। শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই শীত এড়িয়ে চলা ছাড়া বিকল্প নেই।'

সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক নাজমিন বেগম সাংবাদিকদের বলেন, 'শীতে শিশু ও বয়স্ক; উভয়ে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। কারণ দুই বয়সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ থেকে শিশু ও বয়স্কদের রক্ষা করতে পর্যাপ্ত গরম কাপড়, হাত-মোজা, পা-মোজা পরিয়ে রাখতে হবে।'

বাড়ছে আগুনে পোড়া রোগী

চলতি বছর শীতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে আগুনে পুড়ে কয়েকজনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স লিংকন দত্ত সাংবাদিকদের জানান, চলতি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত দগ্ধ ১৪ জন রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ আগুন পোহাতে গিয়ে অথবা গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া রোগী।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, 'গত দুই সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আগুনে পোড়া অর্ধশতাধিক রোগী। এই রোগীদের মধ্যে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত একজনের মৃতু্য হয়েছে।'

অন্যদিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি আগুনে পোড়া দুই রোগীর মৃতু্য হয়, ওই দুদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল অগ্নিদগ্ধ ৪৪ রোগী।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, শীতের সঙ্গে সঙ্গে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই সংখ্যাটা বছরের অন্য মেয়ের চেয়ে চার গুণেরও বেশি। দুর্ঘটনা এড়াতে এ সময় তিনি অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে