বিশ্বকাপে চোখ রেখে শুরু হচ্ছে বিপিএল
প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বেজে উঠেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেটের আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দামামা। সাত দলের লড়াইয়ে কাঁপছে গোটা দেশ। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ এই টুর্নামেন্ট উপভোগ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপ। এরই প্রস্তুতির পস্ন্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। টি২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের দশম আসরকে দেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ইভেন্ট ভেবেই খেলতে নামবে ক্রিকেটাররা।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স এবং নতুন নামকরণ হওয়া দুর্দান্ত ঢাকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে বিপিএল। ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়। দিনের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হবে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭-৩০ মিনিটে। দুটি ম্যাচই হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
এবারের মৌসুমে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে মাঠ মাতাবেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বিপিএল নিয়ে তিনি বলেন, 'কোনো সন্দেহ নেই, টি২০ বিশ্বকাপের আগে বিপিএল অনেক সাহায্য করবে। এটা আমাদের প্রধান টি২০ টুর্নামেন্ট। এখানে ভালো পারফর্ম করে সবার নজর কাড়তে চাই। আমি মনে করি, এই টুর্নামেন্টটি টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে আমাদের সহায়তা করবে।'
শুক্রবার বাদে সপ্তাহের অন্যান্য দিনের প্রথম ম্যাচ দুপুর ১-৩০ মিনিটে এবং দ্বিতীয়টি সন্ধ্যা ৬-৩০ মিনিটে শুরু হবে। শুক্রবারের প্রথম ম্যাচ দুপুর ২টায় এবং দ্বিতীয়টি সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে। এবারের বিপিএলের শিরোপা লড়াইয়ে থাকা
সাতটি দল কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্স, দুর্দান্ত ঢাকা, খুলনা টাইগার্স, ফরচুন বরিশাল, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স।
ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং সিলেটের সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪৩ দিনে মোট ৪৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
বিপিএলে নতুন দল না হলেও এবার নতুন মালিকানার অধীনে খেলবে ঢাকা। ঢাকার কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকা খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, 'যখন কেউ দল গড়ে তখন ওই দলের লক্ষ্য থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কিন্তু বাস্তবে আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা। কখনো কখনো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ভাগ্যের প্রয়োজন হয়।'
টুর্নামেন্টের উন্মাদনা যেমনটা হওয়া উচিত, সেটি প্রত্যাশিতভাবে হয়নি। তবে বিসিবি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, টুর্নামেন্ট শুরু হলে তা সবার মধ্যে সাড়া ফেলবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'জাতীয় নির্বাচন থাকায়, সবাই সেখানে ব্যস্ত ছিল। এ জন্য আমরা উন্মাদনা তৈরিতে খুব বেশি কাজ করতে পারিনি। তবে টুর্নামেন্টটি সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে আমরা সব কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছি। মাঠের লড়াই শুরু হলে এমনিতেই উন্মাদনার সৃষ্টি হবে।'
আগের মতো নয়, এবার টুর্নামেন্টটিকে ভালোভাবে সাজানোর অঙ্গীকার করেছিল বিসিবি। বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক বলেছেন, বিশেষভাবে মিরপুরের উইকেট এমনভাবে প্রস্তুত করা হবে, যেন হাই-স্কোরিং ম্যাচ হয়। তবে মিরপুরের উইকেট সবসময়ই ধীরগতির এবং নিচু হয়ে থাকে।
আগেরবারের চেয়ে ধারাভাষ্যকে মনমুগ্ধকর করতে পাকিস্তানের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজাকে এনেছে আয়োজকরা। তারই স্বদেশি আমির সোহেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক কিংবদন্তি কোর্টলি অ্যামব্রোস, শ্রীলংকার রাসেল আরনল্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এইচডি অ্যাকারম্যানের সঙ্গে ধারাভাষ্যে থাকবেন সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান রাজাও। তাদের সঙ্গে স্থানীয় ধারাভাষ্যকাররাও থাকবেন।
এবার টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ডিআরএস সিস্টেম কার্যকর থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) বেশ কিছু নিয়মে পরিবর্তন এসেছে।
এবার বিপিএলের ম্যাচ টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য থাকছে ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০০ টাকা। ইস্টার্ন স্ট্যান্ডের টিকিট ২০০ টাকায়, উত্তর/দক্ষিণ স্ট্যান্ডের টিকিটের দাম ৪০০ টাকা, ক্লাব হাউস ৮০০ টাকা, ভিআইপি স্ট্যান্ড ১৫০০ টাকা এবং গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ২৫০০ টাকায় কেনা যাবে। ম্যাচের দিন এবং আগের দিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেট সংলগ্ন টিকিট বিক্রির কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাবে।
কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারাইন, তাওহিদ হৃদয়, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, ইফতিখার আহমেদ, জামান খান, খুশদিল শাহ, জনসন চার্লস, নুর আহমেদ, নাসিম শাহ, রশিদ খান। ড্রাফট থেকে : মৃতু্যঞ্জয় চৌধুরী, জাকের আলি অনিক, মাহিদুল ইসলাম অংকন, রিশাদ হোসেন, রাকিম কর্নওয়াল, ম্যাথিউ ওয়াল্টার ফোর্ড, ইমরুল কায়েস, মুসফিক হাসান ও এনামুল হক বিজয়।
দুর্দান্ত ঢাকা : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : তাসকিন আহমেদ, আরাফাত সানি, শরিফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, সিয়াম আইয়ুব, ওসমান কাদির। ড্রাফট থেকে : সাইফ হাসান, ইরফান শুক্কুর, আলাউদ্দিন বাবু, মেহরব হোসেন, লাহিরু সামারাকুন, সামিরা সামারাবিক্রমা, নাইম শেখ, সাব্বির হোসেন, জসিমউদ্দিন।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান, নিহাদুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারিস, নাজিবুলস্নাহ জাদরান, মোহাম্মদ হাসনাইন, স্টিভেন এসকান্দি। ড্রাফট থেকে : তানজিদ হাসান তামিম, আল আমিন হোসেন, সৈকত আলী, ইমরানুজ্জামান, কার্টিস ক্যাম্পার, বিলাল খান, শাহাদাত হোসেন দিপু ও সালাহউদ্দিন শাকিল।