দুর্নীতির দায়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য বাংলাদেশের নাসির হোসেনকে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তার বিরুদ্ধে আনা আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতিবিরোধী কোড ভঙ্গের তিনটি অভিযোগ নাসির মেনে নিয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইসিসি।
৩২ বছর বয়সি নাসিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আইসিসি এনেছিল গত সেপ্টেম্বরে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি টি-টেন লিগে ২০২১ সালের আসরের ম্যাচে দুর্নীতির চেষ্টা করা হলেও সেটি ব্যাহত হয় এমন জানিয়েছিল আইসিসি। নাসিরসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল আইসিসি। তাদের মধ্যে একমাত্র নাসিরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। আজকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য শুধু নাসিরকেই নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে আইসিসি।
দুর্নীতিবিরোধী কোডের তিনটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন নাসির। আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের নিয়োগ করা দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তার ক্ষমতাবলে আইসিসি এ অভিযোগগুলো এনেছে।
এর মধ্যে ২.৪.৩ ধারায় আছে, নাসির ৭৫০ ইউএস ডলার উপহারের রসিদ নিয়োগ করা দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। সে উপহার আইফোন ১২ মডেলের বলে জানানো হয়েছে। ২.৪.৪ ধারা অনুযায়ী, আইফোন ১২ নেওয়ার মাধ্যমের দুর্নীতির প্রস্তাব বা আমন্ত্রণের বিস্তারিত তথ্য দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে দেননি তিনি। এ ছাড়া ২.৪.৬ ধারাও ভেঙেছেন নাসির। তাতে আছে, সম্ভাব্য দুর্নীতির তদন্তে কোনো ধরনের গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়াই সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানানো বা ব্যর্থ হওয়া।
আনুষ্ঠানিক শুনানিতে অংশ নেওয়ার বদলে অভিযোগগুলো মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নাসির। শাস্তির শর্ত পূরণ করতে পারলে ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে আইসিসি।
বাংলাদেশের হয়ে ১৯টি টেস্ট, ৬৫টি ওয়ানডে ও ৩১টি টি-টোয়েন্টি খেলা নাসির সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। গত মে মাসে বাংলাদেশে সর্বশেষ স্বীকৃত ক্রিকেট খেলেন তিনি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। গত আগস্টে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে ইউএস মাস্টার্স টি-টেন লিগে খেলেছিলেন নাসির, যেটি টি-টেন গেস্নাবাল লিগেরই অংশ।
গত আসরে বিপিএলের অন্যতম সেরা পারফরমার ছিলেন এই অলরাউন্ডার। ঢাকা ডমিনেটরসের হয়ে তিনি ১২ ম্যাচ খেলে ৪৫.৭৫ গড়ে ৩৬৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ১৪.৬ গড়ে নিয়েছিলেন ১৬টি উইকেট। তবে দুর্নীতির অভিযোগ আসার পরই নিশ্চিত হয়, শুধু বিপিএল নয়, অভিযোগ থেকে মুক্তি না পেলে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলতে পারবেন না। এখন তো আনুষ্ঠানিকভাবেই নিষিদ্ধ হলেন তিনি।