জিএম কাদের-চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে জাপা অফিস ঘেরাও
প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবিসহ দলে স্বেচ্ছাচারিতার অফিযোগে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতার অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বুধবার দুপুরে বনানী কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ করা হয়।
নেতাকর্মীরা জি এম কাদের ও চুন্নুদের বিরুদ্ধে 'অ্যাকশন অ্যাকশন, কাদের চুন্নুর বিচার চাই,' সেস্নাগান দিচ্ছেন। ঘেরাও করে রাখেন চেয়ারম্যানের বনানী অফিস। নেতাকর্মীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সামাল দিতে পুলিশ অবস্থান নেয় বনানী অফিসে।
ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে অংশ নেন। এখানে উপস্থিত ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, লিয়াকত হোসেন খোকা, সাহিদুর রহমান টেপাসহ দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।
বিক্ষোভে জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। জাতীয় পার্টির যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তার সঙ্গে প্রার্থী মনোনয়ন প্রশ্নে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু তিনি পার্টির মধ্যে বিভক্তি করতে দেননি। অথচ পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের গত ৪ বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অদূরদর্র্শিতা এবং অদক্ষতার কারণে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। পার্টির প্রার্থীদের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা এবং তাদের এক প্রকার পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য
পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। সরকারের কাছে ধরনা দিয়ে ২৬টি আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে।'
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয় তারা আশা করেছিলেন জাতীয় পার্টিকে এতটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু সে বোধদয়ও তাদের হয়নি। আমরা পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীর মনোভাব জানতে পেরেছি। তারা পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দেখতে চান। এমতাবস্থায় জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করা এবং পার্টির ঐক্য বজায় রাখার জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর তারা তাদের পদ থেকে অপসারিত বলে বিবেচিত হবেন।'
বলা হয়, এ পর্যায়ে গঠনতান্ত্রিকভাবে পার্টিতে একজন ভারপ্রাপ্ত/নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ করে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে। এখন একান্ত প্রয়োজনে কিছু রদবদল ব্যতীত পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য পদে অধিষ্ঠিত নেতারা স্বপদে বহাল থাকবেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়ন দানে যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারি হয়েছে এবং ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন, আগামীতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এ মুহূর্তে পার্টিকে সুসংগঠিত করে একটি জাতীয় সম্মেলন করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ।