নির্বাচনী সহিংসতার মামলায় কয়েকজন কর্মী-সমর্থকদের আটকের প্রতিবাদ ও তাদের মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছিলেন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। মঙ্গলবার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কালিহাতী থানার সামনের সড়কে তিনি অবস্থান নিলে তার সঙ্গে যোগ দেন কয়েক হাজার নেতাকর্মীও। পরে ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর অনুরোধে তিনি অবরোধ তুলে নেন। এর আগে চার কর্মী-সমর্থককে পুলিশ ছেড়ে দেয় এবং দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ঘটনাস্থলে পৌঁছে থানায় গিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। পরে আটককৃত ছয়জনের মধ্যে চারজনকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয় এবং সহিসংতার মামলার এজাহারে দুইজনের নাম থাকায় তাদেরকে দ্রম্নত আদালতে পাঠানো হয়। অবস্থানের তিন ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বিকাল সোয়া তিনটার দিকে ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর অনুরোধে তিনি ওই অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি
নির্বাচনের দিন বিকালে কালিহাতীর নাগবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল কাইয়ুম বিপস্নবের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন ৮ জানুয়ারি কালিহাতী থানায় মামলা হয়। সোমবার রাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত দু'জনসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। তারা হচ্ছেন- বাংড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাসমত আলী নেতা, হৃদয়, রফিক, পিন্টু, লাট মিয়া ও মিজানুর রহমান। তাদের মধ্যে হাসমত আলী নেতা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক, অন্যরা সবাই লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থক। অনুসারীদের আটকের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে কালিহাতীতে এসে থানায় যান। তিনি আটক কর্মীদের ছেড়ে দিতে বলেন। পুলিশ তাদের ছেড়ে না দেওয়ায় লতিফ সিদ্দিকী মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মুক্তির দাবিতে থানার সামনে বসে পড়েন।
পুলিশ আটক ছয়জনের মধ্য থেকে এজাহারে নাম না থাকা চারজনকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা হচ্ছেন- হাসমত আলী নেতা, হৃদয়, পিন্টু ও রফিক। এজাহারভুক্ত মো. লাট মিয়া ও মিজানুর রহমান মিজান নামে দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। লতিফ সিদ্দিকীর মহাসড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে এসপি বলেন, এই অবরোধের ফলে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে অনুরোধ জানিয়েছেন। আইন নিজস্ব গতিতেই চলবে।