নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে চীন, ভারত ও রাশিয়াসহ ১১ দেশের রাষ্ট্রদূত।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার সকালে গণভবনে চীন, ভারত ও রাশিয়া ছাড়াও ভুটান, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, ফিলিপিন্স, নেপাল, পাকিস্তান, ব্রাজিল ও মরক্কোর দূতরা শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা প্রত্যেকেই। জবাবে শেখ হাসিনাও ধন্যবাদ জানিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানান।
রোববার
অনুষ্ঠিত শান্তিপূর্ণ' নির্বাচনে আবারও দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ভোট হওয়া ২৯৯ আসনের মধ্যে ২২৩টি পেয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। আর এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকারপ্রধান হওয়ার অনন্য নজির গড়তে চলেছেন।
ঢাকার চীন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে তার দেশের নেতাদের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশপাশি একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের প্রশংসা করেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে ওয়ান বলেছেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে চীন তার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে, পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে এবং বাস্তব সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ।'
এই প্রতিশ্রম্নতির মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্ব নতুন উচ্চতায় উন্নীত করা যায় বলেও এ সময় জানিয়েছেন ওয়ান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চীন-বাংলাদেশ দুই দেশই উন্নয়ন এবং পুনরুজ্জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে আছে বলে উলেস্নখ করেছেন ওয়ান।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আধুনিকায়নের পথে চীন সবসময় বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকা-বেইজিং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মডেল স্থাপন করেছে।'
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষাসহ বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করার কথাও জানিয়েছে চীন। এছাড়া ঐক্য-স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক-আঞ্চলিক বিষয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনে বাংলাদেশকে চীন সহায়তা করবে।
ওয়ান বলেন, 'ভিশন-২০৪১' ও 'সোনার বাংলার' স্বপ্ন দ্রম্নত বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চীন প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ।
বাংলাদেশের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা জোরদারে চীন প্রস্তুত জানিয়ে ওয়ান বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সহজতর ও সম্প্রসারণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে চীন প্রস্তুত আছে। এছাড়া উচ্চমানের চীন-বাংলাদেশ অঞ্চল ও পথের সহযোগিতার প্রচারসহ স্মার্ট বাংলাদেশের বিকাশে অবদান রাখতে বেইজিং প্রস্তুত।'
সুশৃঙ্খল নির্বাচনে ভূয়সী প্রশংসা জাপানের
এদিকে সুঙ্খলভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় সন্তুষ্ট জাপান। দেশটি এ নির্বাচন নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। এজন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় সহাযোগিতাও দেবে তারা। সোমবার জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সন্তুষ্টি প্রকাশ ও সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে এসেছিলেন নির্বাচন ভবনে, যেখানে দেশটির নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও সঙ্গে ছিলেন।
এ সময় সিইসি বলেন, জাপানের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল আমাদের সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য আমাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা যেটা কার্টেসি, ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ওরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন একটা রিপোর্ট দেবে। তারা বলেছেন, ওরা অত্যন্ত সন্তুষ্ট। তাদের ভাষ্য দিচ্ছে, তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, তাদের একজন ১৫ থেকে ১৬টি সেন্টারে গেছেন। আরেকজন চার থেকে পাঁচটি সেন্টারে গেছেন। সব জায়গায় আমাদের যে পোলিংয়ের দায়িত্ব ছিলেন তাদের প্রফেশানালিজমের সুনাম করেছেন, সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে যে নির্বাচন হয়েছে এটার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ওরা সুশৃঙ্খল দেখতে পেয়েছেন এবং ওরা আশা করে এ নির্বাচনটা বাংলাদেশের জন্য একটা দৃষ্টান্তস্বরূপ নির্বাচন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নির্বাচনের জন্য যদি অধিকতর কোনো সহযোগিতা কামনা করি তাহলে ওরা আমাদের সহযোগিতা করতেও রাজি। টেকনিক্যালি এবং ইলেকট্রনিক কোনো কিছু লাগে সেটা আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। প্রয়োজন হলে আমরা তাদের সহযোগিতা নেব। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে তারা উদারভাবে তাদের মন্তব্য করেছেন। ভবিষ্যতে সহযোগিতা করার যে প্রত্যাশা করেছেন এটা তাদের উদারতার বহিঃপ্রকাশ।