জেল-জুলুম, অত্যাচার আর গ্রেনেড বোমা সহ্য করে আওয়ামী লীগ ভোটের পরিবেশ তৈরি করেছে বলেই জনগণ এখন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা সিটি কলেজে রোববার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট দিতে গিয়ে দেশের মানুষকেও ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে দাবি করে সরকারপ্রধান বলেন, 'আজকে নির্বাচনটা যে আমরা সুষ্ঠুভাবে করতে পারছি, সেজন্য আমি আমার দেশের মানুষের প্রতি, দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।'
'অনেক বাধা ছিল, অনেক বিপত্তি ছিল, কিন্তু দেশের মানুষ তাদের ভোটের প্রতি যে সচেতন হয়েছে। নির্বাচনটা যে জরুরি, কারণ পাঁচ বছর পর আরেকটা নতুন সরকার আসবে। জনগণ তার ইচ্ছামতো ভোট দেবে সেই ভোট দেওয়ার পরিবেশটা আমরা তৈরি করেছি।'
সকাল ৮টার আগে আগে ছোটবোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে নিয়ে ভোট দিতে সিটি কলেজে যান শেখ হাসিনা। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে জনগণকেও কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসবেন, আপনার ভোটটা অনেক মূল্যবান ভোট, এই ভোটের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছি, জেল জুলুম, অত্যাচার বোমা
গ্রেনেড অনেক কিছু আমাকে সহ্য করতে হয়েছে। আজকে মানুষ তার ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, মানুষ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারছে এবং নির্বাচনটা অবাধ নিরপেক্ষ হবে।
'আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। জনগণ যাকে খুশি ভোট দিক, কিন্তু নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু হয়, জনগণের সব রকমের সহযোগিতা চাই।'
ভোট ঘিরে সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও নিয়ে তিনি বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত জোটরা জ্বালাও পোড়াও অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। শনিবার আমরা দেখেছি, ট্রেনে আগুন দেওয়া, মানুষকে বাধা দেওয়া, বোমা হামলা, মানুষকে মারা, ককটেল মারা এসব কাজ যারা করেছে তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, দেশপ্রেম না, তারা দেশের কল্যাণও চায় না, তারা দেশের গণতন্ত্রের ধারা চায় না।'
বিএনপি ভোটে না আসার এক প্রশ্নে তিনি বলেন, 'বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, তারা নির্বাচনে কখনওই বিশ্বাসী না। তাদের দল প্রতিষ্ঠা হয়েছে মিলিটারি ডিক্টেটরির মাধ্যমে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলের পর। তারা মানুষের ভোট কারচুপি, সিলমারা, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, এটাই তাদের চরিত্র। আর সেটা করতে পারবে না বলেই নির্বাচনে আসেনি।'
আগের নির্বাচনের প্রসঙ্গ ও বিএনপির ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, '২০০৮-এর নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারে না সেই নির্বাচনে ৩০০ সিটের মধ্যে বিএনপি পেয়েছিল ৩০টি সিট। আর আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছিল ২৩৩টি সিট। এরপর থেকে বিএনপি নির্বাচনের বিরুদ্ধে। কারণ জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির চরিত্র সিল মারা, মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করা, হঁ্যা বা না ভোট; এটাই তাদের চরিত্র।
তিনি বলেন, 'এগুলো করতে পারে না বলেই বিএনপি ভোটে আসেনি। তারা মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাস করে, গাড়িতে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, ট্রেনে আগুন দিয়ে, ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে তারা মনে করে এটাই তাদের রাজনীতি। এটা করতে গিয়ে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। আমি আশা করি দেশের মানুষ ভোট দেবেন, দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখবেন। দেশের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে, মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।'
দোয়া চাইলেন শেখ রেহানা
এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়ে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা।
রাজধানীর গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ভোট দেন তিনি।
পরে শেখ রেহানা বলেন, 'সবাই দোয়া করবেন, সবার কাছে দোয়া চাই। নৌকা জিতবে ইনশালস্নাহ।' এ সময় ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক তার সঙ্গে ছিলেন।