শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আপডেট  : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:২৫
দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। সেই সঙ্গে পুরো দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের। সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তলস্নাশি অভিযান চলছে। ঢাকার প্রবেশ পথগুলোয় চব্বিশ ঘণ্টা চেকপোস্ট বসিয়ে

তলস্নাশি চালানো অব্যাহত আছে।

নির্বাচনী কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়েছে কয়েক হাজার বাড়তি সিসি ক্যামেরা। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে গুজব ঠেকাতে কঠোর মনিটরিং চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর। সেনাবাহিনী ও বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে।

সরেজমিন সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প স্থাপন করে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ঢাকার আশুলিয়া, আব্দুলস্নাহপুর, গাবতলী পর্বতা সিনেমা হল, গাবতলী ব্রিজ, আমিনবাজার, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও শ্যামপুরসহ ঢাকার প্রবেশ পথে পরিচয়পত্র যাচাই করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে থেকে কাউকে বিনাপ্রয়োজনে ঢাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে যুক্ত থাকা সেতু ও সড়কগুলোতে চলছে নজিরবিহীন তলস্নাশি। ফ্লাইওভারে থাকা সিসি ক্যামেরাগুলো সচল রাখা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা। পাবলিক পরিবহণ রাখার টার্মিনাল ও রেলস্টেশনগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল মামুন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান জানান, নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে ১ হাজার ১৫৫ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের নাশকতা মোকাবিলায় বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। বিজিবি সারা দেশে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। বিশেষ প্রয়োজনের জন্য দুটি কুইক রিয়াকশন টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক জানান, আনসার-ভিডিপির ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোট কেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এ ছাড়া ২৫০ পস্নাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা এক হাজার ভাগে ভাগ হয়ে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে।

র্

যাব মহাপরিচালক পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক এম খুরশীদ হোসেন জানান, জঙ্গি-সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারসহ সাইবার ওয়ার্ল্ডে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটরিং করা হচ্ছে। নির্বাচনে যে কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছের্ যাব। প্রস্তুত রাখা হয়েছের্ যাবের ডগ স্কোয়াড, বম্ব ডিসপোজাল টিম, হেলিকপ্টার, স্পেশাল ফোর্সসহ অন্যান্য টিম ও সরঞ্জামাদি।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনীর প্রধান রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী জানান, বাহিনীর সদস্যরা মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। উপকূলীয় এলাকার ৪৩টি ইউনিয়নের সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, ঢাকার এক হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে অনেক জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। গুজব ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্য মাধ্যমের ওপর চব্বিশ ঘণ্টা মনিটরিং চলছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, নির্বাচন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দেশের সব ফায়ার স্টেশনের কর্মরতদের স্ট্যান্ডবাই থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারদের। অগ্নিনির্বাপনের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধার সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি বিভাগে আলাদা ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালুর পাশাপাশি হটলাইন নম্বর ১৬১৬৩ ও ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯ চালু রাখা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে