ট্রেনের আগুনে নাশকতার গন্ধ!
সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন দগ্ধ আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন চলাচল
প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:২৪
যাযাদি রিপোর্ট
ট্রেনে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি নাশকতামূলক বলে সন্দেহ করছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের বক্তব্য মাত্র পাঁচ মিনিটে ৪টি বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। গানপাউডার ছিটিয়ে তাতে আগুন দেওয়া হতে পারে। যে কারণে বগিতে পুড়েই তাৎক্ষণিকভাবে শিশু ও নারীসহ চারজনের মৃতু্য হয়েছে। দগ্ধ আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ট্রেনে আগুনে হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করে ঘটনা তদন্তের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে গঠিত সাত সদস্যের কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলে ২০টি ও পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি লোকাল ট্রেন চলাচল শনিবার ও রোববার দুই দিন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন আগের মতো চলবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রেনের নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে বিএনপির এক নেতাসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৯টায় ঢাকায় আসার পথে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামে ৭৯৫ নম্বর যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পুড়ে যাওয়া ট্রেন পরিদর্শন শেষে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি নাশকতামূলক বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রেনে গতি থাকার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেন থামানো যায় না। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রেল বিভাগ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খান জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী মো. সৌমিক শাওন কবিরকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রেল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একটি চলন্ত ট্রেন থামাতে হলে অন্তত চারশ' মিটার দূর থেকে থামানোর চেষ্টা করতে হয়। অথবা বিপদের সিগন্যাল পাওয়ার পর অন্তত ৪০০ মিটার জায়গা বা ট্রেল লাইন লাগে।
পুড়ে যাওয়া বগি থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ডিবি পুলিশ, ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি), পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটসহ (এটিইউ) বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আলামত সংগ্রহ করেছে। সংগৃহীত আলামতের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে পরীক্ষাগারে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থলে গানপাউডার পাওয়ার আলামত মিলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে গানপাউডার ছিটিয়ে দেওয়ার পর তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
কারণ গানপাউডারে এমনি এমনি আগুন লাগে না। তবে একটি বিশেষ ধরনের গানপাউডার আছে যা ছিটিয়ে দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পর আপনা আপনি আগুন ধরে যায়। সেই ধরনের উচ্চমাত্রার কোনো রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয়েছে কিনা তা সংগৃহীত আলামত পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শী মাঝবয়সি রোখসানা বলেন, 'আমার বাসা ওভারব্রিজের নিচের বস্তিতে। ট্রেনটি সায়েদাবাদ মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে আসলে তাতে আগুন দেখা যায়। আগুনটি ট্রেনের মাঝ বরাবর ছিল। এ সময় তার সঙ্গে আরও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন আগুন বলে চিৎকার করছিলেন। কিন্তু ট্রেনটি কোনোভাবেই থামছিল না। ফ্লাইওভার থেকে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাত দক্ষিণ দিকে থাকতেই ট্রেনে আগুন দেখা যায়। মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে ট্রেন চলে আসে গোপীবাগ ও গোলাপবাগ এলাকায়। এই সময়ের মধ্যেই ট্রেনের মাঝখানের চারটি বগিতে চোখের পলকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের মানুষের চিৎকারে যাত্রীরা জানালা দিয়ে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। ট্রেনটি যথেষ্ট গতিতে চলায় যাত্রীরা নামতে পারেননি।'
প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ট্রেনটিতে মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে মাঝ বরাবর চারটি বগিতে চোখের পলকে আগুন লেগে যায়। প্রাণে বাঁচতে যাত্রীরা জানালা দিয়ে নামার চেষ্টা করেন। অনেকেই জানালা দিয়ে বের হয়ে আর নামতে পারেননি। জানালার সঙ্গে ঝুলেই অনেককে পুড়তে দেখা গেছে। পূর্ব দিকের গোলাপবাগের ৩৪/১ নম্বর বিসমিলস্নাহ হার্ডওয়্যারের দোকানের কাছে এসে ট্রেনটি আচমকা থেমে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন ট্রেনে লাগা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু ট্রেন লাইনের দুই পাশেই অন্তত দশ ফুট দেয়াল দিয়ে ঘেরা। দেয়ালের মাঝে ছোট ছোট পকেটের মতো করে রাস্তা করা হয়েছে। সেই পকেটের রাস্তা দিয়ে মানুষ পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কারণ আগুন ততক্ষণে মাঝখানের চারটি বগিতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।'
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী গোলাপবাগ বাজারের মাছ কাটার সঙ্গে জড়িত আল হাবিব বলেন, 'আগুন আস্তে আস্তে ট্রেনের মাথার দিকে যেতে থাকে। ট্রেনের মাথার দিকে একটি বগিতে আগুন লেগে। সেই বগির সঙ্গেই ছিল পাওয়ার কার। পাওয়ার কারে একাধিক জেনারেটর রয়েছে। জেনারেটর চলার জন্য ট্রেনে বিরাট আকারের জ্বালানি রাখার ট্যাংক থাকে। সেই ট্যাংকের কাছে আগুন চলে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ভয়ে ট্যাংক বিস্ফোরণের ভয়ে সেখান থেকে চলে যান।'
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে রেল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি লোকজন সেখানে যান। তারা যে চারটি বগিতে আগুন লাগে, সেই চারটি বগি মূল ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন লাগা ৪টি বগি রেখে অন্য বগিগুলো কমলাপুর রেলস্টেশনের সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যায়। পরে পোড়া বগিগুলোও সেখানে নিয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মিডিয়া কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, রাত ৯টা ৫ মিনিটে তারা ট্রেনে আগুন লাগার খবর পান। সবমিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু আগুন নেভাতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। কারণ যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশের কোনো পথ নেই। একটি মাত্র বড় রাস্তা আছে। সেই রাস্তা দিয়ে একটি বড় গাড়ি প্রবেশ করে। সেই গাড়ির পাইপ ট্রেনে নিয়ে আগুন নেভাতে হয়। রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। পরে ট্রেন থেকে নারী ও শিশুসহ চারজনের লাশ উদ্ধার হয়। রাতেই পুড়ে যাওয়া বগিগুলো কমলাপুরে রেলস্টেশনের কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ সূত্রে জানা গেছে, পুড়ে মারা যাওয়া চারজনকে চেনার কোনো উপায় ছিল না। তারা পুড়ে এক প্রকার কয়লা হয়ে গেছে। এজন্য তাদের দেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যারা এসে স্বজনদের খোঁজ করছেন তাদের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই মূলত নিহতদের পরিচয় শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল যায়যায়দিনকে জানান, দগ্ধরা হচ্ছেন আসিফ মোহাম্মদ খান (৩০), ডক্টর কৌশিক বিশ্বাস (৩২), নাফিজ আলম (২২), মো. মাসুদ রানা (৩১), ডেইজি আক্তার রত্না (৪০), রেহান (৬), দিহান (১১) ও মো. ইকবাল। দগ্ধদের অবস্থা গুরুতর। অমিত কুমার দেবনাথ নামে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসায় পাঠানো সম্ভব হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত। দগ্ধদের শরীরে তেমন কোনো পোড়ার চিহ্ন না থাকলেও তাদের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মর্গের সামনে যারা তাদের স্বজন নিহত হওয়ার দাবি করছেন তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া তাদের শরীর থেকেও সংগ্রহ করা হয়েছে ডিএনএ নমুনা। একই সঙ্গে রাখা হয়েছে লাশের দাবিদারদের লিখিত আবেদনপত্র। ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিহতদের লাশ যার যার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের কারখানায় রাখা বেনাপোল এক্সপ্রেসের বগি ঘুরে দেখা গেছে ভয়াবহ দৃশ্য। আগুন পুরোপুরি ছাই হয়ে গেছে বগির সবকিছু। সরেজমিন দেখা গেছে, পাওয়ার কারের অর্ধেক পুড়ে গেছে। আর পাওয়ার কারের ঠিক পেছনে থাকা শোভন চেয়ার ছ-৭৯৩৬ ও জ-৭৯৩৬ নম্বর কোচ দুটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। কোচ দুটির কিছুই আর পোড়ার বাকি নেই। সবার শেষে থাকা ঝ নম্বর কোচটির ৭৫ ভাগই পুড়ে গেছে।
ট্রেন মেরামতকারীরা বলেন, পাওয়ার কারটিতে দুটি বড় বড় জেনারেটর আছে। এসব জেনারেটর চালানোর জন্য অনেক জ্বালানি লাগে। জ্বালানি রাখার বিশাল আকারে বেশ কয়েকটি ফুয়েল ট্যাংক আছে। এই ফুয়েল ট্যাংকের জ্বালানি দিয়ে উৎপাদিত বিদু্যৎ দিয়ে পুরো ট্রেন আলোকিত করে রাখা হয়। ভাগ্য ভালো ট্যাংকে আগুন লাগেনি। লাগলে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটত।
কমলাপুর রেলস্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনটি বেনাপোল স্টেশন থেকে দুপুর ১টার সময় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। স্টেশনটিতে ওই সময় মাস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন পারভীন আক্তার। গার্ড ছিলেন আল আমিন ও নুরুল ইসলাম। ট্রেনটির চালক ছিলেন সারোয়ার আলম ও সহকারী চালক ছিলেন জাহিদ হাসান।
এদিকে শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, ট্রেনে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা। আগুন লাগানোর পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির এক নেতাসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উলস্নাহ নবী। অন্যরা হচ্ছেন যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম, ইকবাল হোসেন স্বপন, রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপস্নব, সালাউদ্দিন, কবির ও হাসান আহমেদ।
ডিবি প্রধান বলেন, বিএনপির ১০ থেকে ১১ জন ট্রেনে আগুন লাগার আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অগ্নিসন্ত্রাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে। ট্রেনে অগ্নিসন্ত্রাসের পরিকল্পনায় বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারাও জড়িত। তারাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সে প্রথমেই আসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও আরেক নেতা কাজী মনসুর।
ডিবি প্রধান বলেন, ভিডিও কনফারেন্সে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা জানায় তারা। অথবা কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনে আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছে।
ডিআইজি হারুন বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নের তত্ত্বাবধায়নে যুবদলের কয়েকটি টিম লালবাগের কয়েকজন দাগি সন্ত্রাসী দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন লাগায়। ভিডিও কনফারেন্সে বলা হয়, ট্রেনে কে আগুন লাগাবেন? কনফারেন্সে থাকা ১০ থেকে ১২ জনের একজন বলেন, তিনি আগুন লাগাতে পারবেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। ভিডিও কনফারেন্সে থাকা আরও তিনজন আগুন লাগাতে পারবে বলে জানায়। তারা ২০১৩-১৪ সালে বিভিন্ন এলাকায় বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। তারাই মিলে যাত্রাবাড়ীর আশপাশের এলাকা থেকে ট্রেনটিতে অগ্নিসংযোগ করে।
এদিকে ট্রেনে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনার পরপরই অভিযানে নামের্ যাব।র্ যাব-৩ এর সদস্যরা শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকার জুরাইন রেললাইনের পাশের একটি বাড়ি থেকে প্রচুর ককটেল ও পেট্রোল বোমা বানানোর সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
রাতেইর্ যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন স্পট ব্রিফিংয়ে জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকেই সারা দেশে অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার ঘটনাটি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। ট্রেনে অগ্নিকান্ডের সূত্র ধরে চলমান অভিযানে নাশকতাকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আবুল কাশেম (৩৫), ফজলে রাব্বী (২৭) ও আলমগীর হোসেন (৩০) নামে তিনজনকে। তাদের কাছে পাওয়া গেছে ৩০টি ককটেল ও ২৮টি পেট্রোল বোমাসহ নাশকতা চালানোর নানা সরঞ্জাম। জব্দ হওয়া বোমা দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বড় ধরনের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা ছিল গ্রেপ্তারদের।