শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
নারায়ণগঞ্জের সমাবেশে শেখ হাসিনা

ভোট দিয়ে প্রমাণ করুন দেশে গণতন্ত্র আছে

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -ফোকাস বাংলা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাইকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজকে আমরা ২০২৪-এ পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশে এত উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।'

বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর এলাকায় এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'নির্বাচনকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনও চলছে। যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, তারা দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে। মিলিটারি ডিকটেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা সেই একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে।'

ভোটের অধিকার রক্ষায় সরকারের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আজকে ৪ তারিখ। ৭ তারিখে নির্বাচন। আমি দেশের সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটের অধিকার আপনাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার মিলিটারি ডিকটেটররা কেড়ে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করেছিল। এই আমরা আওয়ামী লীগ সেখান থেকে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। হত্যা, কু্য, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, প্রতি রাতে কারফিউ অবস্থা- সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। এই ভোটের অধিকার আপনার মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'এই নারায়ণগঞ্জ ইতিহাসের সাক্ষী। বঙ্গবন্ধু ৬ দফার জন্য নারায়ণগঞ্জে মিটিং করেছিলেন, তা হয়েছিল আদমজীতে। ওইদিন রাতেই তাকে আটক করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা কারাগারে। ১৯৬৮ সালে ১৮ জুন ঢাকা কারাগার থেকে ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা আগরতলা মামলা দেওয়া হয়। কিন্তু বাঙালিরা সংগ্রাম শুরু করে। ৬ জুন হরতাল ডাকা হয়। এই নারায়ণগঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিল। বিভিন্ন আন্দোলনে, বিভিন্ন সভায় নারায়ণগঞ্জই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।'

তিনি বলেন, '২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি ২০ দলীয়ভাবে ও আমরা মহাজোট হয়ে নির্বাচন করি। আমরা ২৩৩ সিটে জয়লাভ করেছিলাম। বিএনপি পায় শুধু ৩০টি সিট। বাকিগুলো জোটের মিত্ররা পেয়েছিল। এ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা নির্বাচন ঠেকাতে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, '২০১৪-এর নির্বাচন যাতে না হয় সে লক্ষ্যে ২০১৩ থেকেই তারা অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলেছে। মানুষকে হত্যা করেছে, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। এই জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুন করাই হলো বিএনপির একমাত্র গুণ।'

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলে দলে সমাবেশে স্থলে এসে জমায়েত হন।

সমাবেশ থেকে মাইকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। তিনি বলেন, 'চারিদিকে শকুন উড়ছে। আমাদের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।'

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, 'জেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলে দলে সমাবেশে ছুটে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে তাকে স্বাগত জানাতে তারা সবাই এসেছেন। পুরো মাঠ নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ হয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।'

জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে