অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ট্রেনের তিন শতাধিক যাত্রী খোলা ছিল ১৪ স্স্নিপারের হুক
প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ময়মনসিংহ থেকে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মঙ্গলবার ভোরে নেত্রকোনার জারিয়া রেলস্টেশনে যাচ্ছিল একটি লোকাল ট্রেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পূর্বধলা ও জারিয়া রেলস্টেশনের মাঝামাঝি একটি রেলসেতুর ১৪টি সিস্নপারের ২৮টি ডগস্পাইক (হুক) রহস্যজনকভাবে খোলা দেখতে পান আনসার সদস্যরা।
তারা দ্রম্নত বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও ততক্ষণে ট্রেনটি পূর্বধলা থেকে জারিয়ার উদ্দেশে রওনা করে। পরে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় ঘটনাস্থলের ২০০ গজ আগেই ট্রেনটি থামানো সম্ভব হয়। এতে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান ট্রেনের তিন শতাধিক যাত্রী।
এদিন সকাল আটটার দিকে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বালুঘাটার ১৭ নম্বর রেলসেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা নতুন করে সিস্নপারের হুক লাগালে সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জারিয়া রেলস্টেশন ও পূর্বধলা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ময়মনসিংহ-জারিয়া ৬৫ কিলোমিটার
রেলপথে প্রতিদিন ৪টি লোকাল ও ১টি কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার উদ্দেশে একটি ট্রেন ছেড়ে যায়। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পূর্বধলা-জারিয়া রেলস্টেশনের মাঝামাঝি বালুঘাটা এলাকায় ১৭ নম্বর রেলসেতুর সিস্নপারের বেশ কিছু হুক খোলা পান আনসার কমান্ডার জিয়াউর রহমান। তিনি মুঠোফোনে ঘটনাটি জারিয়া ও পূর্বধলা রেলস্টেশনের মাস্টার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান। ততক্ষণে ট্রেনটি পূর্বধলা রেলস্টেশন ত্যাগ করে। কয়েক মিনিট পরই ট্রেনটির ঘটনাস্থল অতিক্রমের কথা ছিল। ইউএনও খবিরুল আহসান ও স্টেশনমাস্টার আবদুল মোমেন তাৎক্ষণিকভাবে মুঠোফোনে বিষয়টি ট্রেনের চালককে জানালে ঘটনাস্থলের ২০০ গজ আগেই ট্রেনটি থামানো সম্ভব হয়। পরে রেলের মিস্ত্রিরা হুক স্থাপন করলে সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পূর্বধলা রেলস্টেশনের মাস্টার আবদুল মোমেন বলেন, ডগস্পাইকের (হুক) সাহায্যে কাঠের সিস্নপারগুলো রেলের লোহার পাতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৪টি সিস্নপারের ২৮টি ডগস্পাইক একই সময়ে খুলে থাকার ঘটনা স্বাভাবিক নয়, খুবই রহস্যজনক। ধারণা করা হচ্ছে, দুষ্কৃতকারীরা হুকগুলো খুলে রেখেছিল।
জারিয়া রেলস্টেশনের মাস্টার মনির হোসেন বলেন, 'আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আনসার সদস্যরা টের না পেলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত। ব্যাপক প্রাণহানিও হতে পারত।'
ইউএনও মো. খবিরুল আহসান জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিকভাবে এটিকে নাশকতার চেষ্টা বলেই মনে করছেন। তদন্ত করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ বলেন, 'বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ আইনি সহযোগিতা চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে তা করা হবে।'