ইতিহাস গড়া হলো না। হার দিয়ে শেষ হলো নিউজিল্যান্ড সফর। হার দিয়ে শেষ হলো ২০২৩ সাল। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ইতিহাস গড়ে সিরিজ জেতা। কিন্তু সেটি আর হলো না। শেষ ম্যাচ বৃষ্টি আইনে হেরে সিরিজ জয় হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে বৃষ্টি বাধায় ডিএলএস পদ্ধতিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
২০২৩ সাল হার দিয়ে শেষ হলেও নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ পেয়েছে অনেক কিছুই। এর মধ্যে দেশটির মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ও টি২০তে জয় পেয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তাতে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চোখে এই সফর সফল বলে জানিয়েছেন তিনি।
ম্যাচ শেষে
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, 'অতীতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কী করেছি, সেগুলো নিয়ে সিরিজের শুরুতে আমরা কথা বলেছিলাম। সব মিলিয়ে আগের চেয়ে ভালো কিছু করতে চেয়েছিলাম। আর সেসব দিক থেকে ভাবলে আমার চোখে এই সিরিজ সফল।'
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি। সেই মাঠেই বছরের শেষ দিনটিতে শেষবারের মতো লড়াইয়ে নামে টাইগাররা। জয় পেলেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জনের সুযোগ। কিন্তু সেই সুযোগ মিচেল স্যান্টনারদের ঘূর্ণিতে প্রায় উড়েই গেছে। প্রথম ইনিংসে কাজের কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে শান্তবাহিনী।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ৫ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। আর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয় পেলে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র হয়।
প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ স্যান্টনার-সোধির ঘূর্ণিতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার চার বল আগেই সফরকারীরা ১১০ রানে অলআউট হয়ে যায়। ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ এক চারে রানের খাতা খোলেন ওপেনার সৌম্য সরকার। তাতে আশায় বুক বাঁধা। কিন্তু এরপরই পথ হারানোর শুরু সৌম্যকে দিয়েই। ১৫ বলে ১৭ রান করা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও ফিরেছেন হতাশার কাব্য উপহার দিয়ে। সেই হতাশা আরও বেড়েছে আরেক ওপেনার রনি তালুকদারের আউটে।
এ ছাড়া তাওহিদ হৃদয় ১৮ বলে ১৬ এবং আফিফ হোসেন ১৩ বলে ১৪ রান করেন। শামিম হোসেনরা দিতে পারেননি আস্থার প্রতিদান। গুরুত্বপূর্ণ সময় বিলিয়েছেন নিজেদের উইকেট। তাদের মতো ব্যর্থ হয়েছেন শেষদিকের ব্যাটাররাও। তাতে বড় লক্ষ্য দূরের কথা, লড়াই করার মতো শক্ত পুঁজিই মেলেনি বাংলাদেশের ব্যাটে। কিউইদের হয়ে ১৬ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন স্যান্টনার। এ ছাড়া সাউদি, মিলনে ও সিয়ার্স প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। কেবল সোধি উইকেট না পেলেও, নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ৮ ওভার ৩ খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪৯ রান। টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪ ওভার খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। এরপর বৃষ্টি শুরু হওয়া বল আর মাঠে গড়ায়নি। ফলে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১৭ রানে জয় পায় স্বাগতিকরা। এতে তিন ম্যাচের সিরিজটি ১-১ ব্যাবধানে ড্র হয়েছে। আরেকটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ১৯.২ ওভারে ১১০ (সৌম্য ৪, রনি ১০, শান্ত ১৭, হৃদয় ১৬, আফিফ ১৪, শামীম ৯, মেহেদি ৪, রিশাদ ১০, শরিফুল ৪, তানভির ৮, মুস্তাফিজ ৩*; সাউদি ২/২৫, মিলনে ২/২৩, সিয়ার্স ২/২৮, স্যান্টনার ৪/১৬, সোধি ০/১৬)।
নিউজিল্যান্ড : ১৪.৪ ওভারে ৯৫/৫ (অ্যালেন ৩৮, সাইফার্ট ১, মিচেল ১, ফিলিপস ১, চ্যাপম্যান ১, নিশাম ২৮*, স্যান্টনার ২০*; তানভির ০/১২, মেহেদি ২/১৮, শরিফুল ২/১৭, মুস্তাফিজ ০/১৩, রিশাদ ০/১৯, শান্ত ০/১৪)।
ফল : নিউজিল্যান্ড বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মিচেল স্যান্টনার (নিউজিল্যান্ড)।
সিরিজসেরা: শরিফুল ইসলাম (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা।