শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এইডস নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা ও বৈষম্য দূর করতে হবে : ডা. নাসিমা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৯ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

এইচআইভি এইডস ভাইরাসে আক্রান্ত জনগোষ্ঠী নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা ও বৈষম্য আছে তা দূর করতে হবে। শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ধারণা আছে- এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের জীবন-যাপন ভালো না। তাদের জীবন-যাপন ইসলামিক না। এজন্য এইডস হয়েছে। তাদের প্রতি আঙ্গুল তুলে দেখানো হয় তারা পাপাচারী। এজন্য কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা ও বৈষম্য দূর করতে গণমাধ্যমে ইসলামিক প্রোগ্রামগুলোতে এইচআইভি এইডস ভাইরাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে?। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এইচআইভি এইডস ভাইরাসের অবস্থা পরিসংখ্যানগতভাবে অনেক ভালো। তবে এটা যে কোনো সময় খারাপ পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে। এটা প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের অনেক ভূমিকা রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডিরেক্টর টিবিএল ও এএসপি অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম বলেন, আট দশটা ক্রনিক ডিজিজেসের মতো এটিও একটা রোগ। রোগ একেবারে সেরে যাবে না। এইচআইভিতে আক্রান্ত হলে মানুষের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তবে আজকে আক্রান্ত হলে কালকেই যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে সেটা নয়। কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে যেকোনো ইনফেকশনেই মৃতু্য হতে পারে। আমরা যে কাজটা করি, ওষুধ দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করি। রোগটা যাতে না ছড়ায় সেজন্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস এসটিডি প্রোগ্রামের সিনিয়র ম্যানেজার মো. আক্তারুজ্জামান এইডসের সর্বশেষ তথ্য উলেস্নখ করে বলেন, বর্তমানে বিশ্বের মোট এইডস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৮ মিলিয়ন। এরমধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৮ মিলিয়ন। দেশে বর্তমানে এইচআইভি এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। যাদের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে মাত্র ৭ হাজার ৩৭৪ জন। এখনো শনাক্তের বাইরে রয়ে গেছে প্রায় ৭ হাজার। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আছে ১০৫ জন। দেশে গত বছর এই রোগে ১ হাজার ২৪২ জনের মৃতু্য হয়েছে। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৭২ জন, চট্টগ্রামে ২ হাজার ৮ জন, সিলেট বিভাগে ১ হাজার ১৯ জন রয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশে এখনো সাধারণ জনগণের মধ্যে সংক্রমণের হার শূন্য দশমিক ০১ ভাগের নিচে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী যেমন, শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, সমকামী ও হিজড়াদের মধ্যে সংক্রমণের হার ২ শতাংশ। তারা জানায়, এইডস/এসটিডি কর্মসূচি সম্প্র্রতি ইউএন এইডসের ৯০-৯০-৯০ লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তদের ৯০ শতাংশকে শনাক্তের আওতায় আনা। শনাক্তকৃতদের মধ্যে ৯০ শতাংশকে চিকিৎসা সেবার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং চিকিৎসা সেবায় থাকা ৯০ শতাংশের ভাইরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখা।

অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল আরও বলেন, সারাদেশে ২৮টি এইচটি সেন্টার আছে। জিন এক্সপার্ট মেশিন এইচআইভি ভাইরাস শনাক্তে কাজ করা হচ্ছে। মেশিনটি ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, তাই দ্রম্নত সময়ে বাকিদের শনাক্তের আওতায় আনা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডিরেক্টর টিবিএল ও এএসপি অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন নাট্যকার মামুনুর রশিদ, আজাদ আবুল কালামসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে