বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

মুনীরুজ্জামান আর নেই

যাযাদি রিপোর্টি
  ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০৮

দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান আর নেই। মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে খন্দকার মুনীরুজ্জামান মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হলেও পরবর্তীতে নানা শারীরিক জটিলতায় তিনি মৃতু্যবরণ করেন। দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের মৃতু্যতে সাংবাদিকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খন্দকার মুনীরুজ্জামানের মৃতু্যতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা পৃথক বিবৃতিতে সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের মৃতু্যতে শোক প্রকাশ করেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এক শোকবার্তায় খন্দকার মুনীরুজ্জামানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই এই গুণী সাংবাদিকের মৃতু্যতে শোক জানিয়েছেন। মুনীরুজ্জামানের স্ত্রী ডা. রোকেয়া খাতুন রেখা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর (অব.)। তার একমাত্র ছেলে ইশতিয়াক আলম সঞ্জু সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের এসিস্টেন্ট প্রফেসর (সার্জারি) হিসেবে কর্মরত আছেন। পুত্রবধূ ডা. ফারজানা হক পর্না মৌলভীবাজার আড়াইশ' শয্যা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট, গাইনি (ইনচার্জ)। তার একমাত্র নাতি অরিত্র। খন্দকার মুনীরুজ্জামান ১৯৪৮ সালের ১২ মার্চ ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ডন স্কুলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি। সেখান থেকে মুসলিম বয়েজ স্কুলে পড়েছেন ২ বছর। তারপর পড়েছেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৬৫ সালে ম্যাট্রিকুলেশন। ঢাকা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। জগন্নাথ কলেজ থেকে সয়েল সায়েন্সে ডিগ্রি পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে এমএ ভর্তি হন। পরে নানা টানাপড়েনের মধ্য পড়ে কোর্সটি সম্পন্ন করা হয়নি। মুনীরুজ্জামান ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সময় ১৯৬৩ সালের নভেম্বরে জগন্নাথ কলেজে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে ছাত্র ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হন। '৬৫ সাল থেকেই গোপন কর্মী হিসেবে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মহানগরীর অগ্রণী নেতা হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। '৬৯-এর মহান গণঅভু্যত্থানে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। '৭০-এর দিকে শ্রমিক আন্দোলনে যোগদান করেন। একাত্তরে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টির সম্মিলিত বিশেষ গেরিলা বাহিনীর প্রথম ব্যাচে আসামের তেজপুরে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে প্রবেশ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীনতার পর উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে কাজ করেন। ৯০ দশকের এক পর্যায়ে ঢাকা মহানগর কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র সাপ্তাহিক একতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে '৯০-এর দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিনে যোগদান করেন। পরে তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম লেখকের পরিচিতি পান। ১৯৯৬ সালের ১৪ মে তিনি দৈনিক সংবাদে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন এবং আমৃত্য এ দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৯ সালে মুনীরুজ্জামান প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। দীর্ঘদিন কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে