শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
বাড়ছে জরিমানা

মাস্ক পরাতে এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

ইতোমধ্যে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে 'নো মাস্ক, নো সার্ভিস' এবং 'নো মাস্ক, নো এন্ট্রি' বাস্তবায়ন করা হচ্ছে
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ০০:১৯
বিভিন্ন অজুহাতে মাস্ক পরছে না অনেকেই। করোনার সম্ভাব্য দ্বিতীয় ধাপে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জনসচেতনতার জন্য রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। এ সময় মাস্ক না পরায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয় -যাযাদি

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। ইতোমধ্যে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে 'নো মাস্ক নো সার্ভিস' এবং 'নো মাস্ক নো এন্ট্রি' বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মাস্ক পরাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে নানা প্রচারণা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম। মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনায় সারাদেশে চলছে মোবাইল কোর্টের বিশেষ অভিযান ও জরিমানা। তারপরও মানুষ মাস্ক পরতে চাচ্ছে না। এবার মোবাইল কোর্টগুলোকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে জানান, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় মাস্ক পরা নিয়ে এসব নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে রক্ষায় সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে আগামী সপ্তাহে আরও কঠোর অবস্থানে যাবে প্রশাসন। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনায় মাস্কের বিষয়ে খুব কঠোর হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার বিভাগীয় কমিশনাররা জানিয়েছেন, গত সাত দিন ধরে তারা ম্যাসিভলি ফাইন (বড় ধরনের জরিমানা) করছেন। গতকালও কয়েক হাজার লোককে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা বলেছি আরও এক সপ্তাহ দেখতে। জরিমানায়ও যদি মানুষ সচেতন না হয় তাদের আরও মোটিভেশন করুন, তারপর আরেকটু স্ট্রং পানিশমেন্টে (কঠোর শাস্তি) যেতে হবে। কঠোর শাস্তির বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, জরিমানা বাড়তে পারে। এখন ৫শ' থেকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করছে, সেটি পাঁচ হাজার টাকা করবে। যারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন, তারা সঙ্গে মাস্কও নিয়ে যাবেন, যাতে মানুষকে জরিমানা করার সঙ্গে মাস্ক দেওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যেভাবে হোক আরও বেশি প্রচার করেন, ফোর্স হোক, যেভাবে হোক মানুষ যেন মাস্ক ব্যবহার করে। মাস্ক ব্যবহার না করলে ওষুধ কাজ করবে না। ঢাকা শহরে গতকাল ৩৭টি জায়গায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একেক জায়গায় একেক রকম জরিমানা করা হচ্ছে, কোথাও ৫০০ টাকা কোথাও এক হাজার টাকা। মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঢাকা বিভাগে যেভাবে ছড়াচ্ছে বাইরে সেই পরিমাণে ছড়াচ্ছে না। কারণ আমরা হাসপাতালের অবস্থা দেখছি। হাসপাতালে রোগী বেড়ে গেছে। ঢাকা শহরে গত ১৫ দিন আগে যেখানে ৩০০ রোগী ছিল, গতকাল বোধহয় ৬০০ হয়ে গেছে। সেটা থেকে মনে হচ্ছে যে, এটা (কোভিড-১৯) আরেকটু বেড়েছে। এ দিকে দুস্থ শিল্পীদের সহায়তা, তহবিল গঠন ও চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২০-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বৈঠকে, চলচ্চিত্র ও শিল্পীদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত আইনটি নিয়ে আলোচনা করেন নীতিনির্ধারকরা। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অসমর্থ, অসচ্ছল বা পেশাগতভাবে কাজ করতে অক্ষম চলচ্চিত্র শিল্পীকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান, অসুস্থ চলচ্চিত্র শিল্পীদের চিকিৎসার ব্যয় বহন বা আর্থিক সহায়তা প্রদান, দুস্থ, অসচ্ছল চলচ্চিত্র শিল্পীর মৃতু্য হলে তার পরিবারকে সহায়তা প্রদানে একটা তহবিল থাকবে ট্রাস্টে। সেই তহবিল জেনারেট করে তা দিয়ে সবাইকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কৃষি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ এবং বৈদেশিক সহায়তা সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়। সচিবালয় থেকে বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ অন্য মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীরা ভার্চুয়ালি সভায় অংশগ্রহণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে