শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
রংপুর

শীত মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন

আবেদুল হাফিজ
  ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। এবার এ অঞ্চলে তীব্র শীতের পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সব কিছু মাথায় রেখে শীত ও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলার হাসপাতালগুলো। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাপমাত্রা ওঠানামা করায় ইতোমধ্যে আগাম বার্তা দিতে

শুরু করেছে শীত।

রংপুর অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়ে পৌষ ও মাঘ মাসে। এসময় বইতে থাকে শৈত্যপ্রবাহ। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন হয়ে পড়ে স্থবির। কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি ও জ্বরসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে অনেকেই আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া বার্ডফ্লু ও সোয়াইনফ্লুর প্রাদুর্ভাবও দেখা যায়। এসব রোগে অনেকের প্রাণহানিও ঘটে। শীতবস্ত্রের অভাবে চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ উঠে চরমে।

এবার তীব্র শীতের পাশাপাশি করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এসব মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলো আগাম কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান যায়যায়দিনকে জানান, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় থেকে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। কখনো ২৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা ওঠানামা করায় শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে আবহাওয়া।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রোস্তম আলী জানান, সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওই ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সংযোগ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত রোগীদের জন্য কেবিনও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এছাড়া কেভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতাল ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য মেডিকেল ক্যাম্পাসে আলাদা ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জন অফিসের গত ৫ বছরের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, এসময়ে শীতজনিত রোগে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ১২৪ জন। এর মধ্যে শিশু ৯৯০ ও মা ১৩৪ জন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় যায়যায়দিনকে জানান, শীতের সময় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে জেলার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যাপ্ত ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় ওয়েভে করোনা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য ফলসহ ভিটামিন খাবার গ্রহণে সবাইকে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার গ্রহণের সঙ্গে রোদ বা সূর্যের আলোতে দিনের কিছু সময় কাটানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেন তিনি।

রংপুর জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান যায়যায়দিনকে জানান, শীতের সময় হতদরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে অতিরিক্ত শীতবস্ত্রের চাহিদার কথা বলা হয়েছে। শীত মৌসুমে দ্বিতীয় ওয়েভে কোভিট-১৯ মহামারির কথা মাথায় রেখে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এ সময় কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের জন্য জিআর চাল, নগদ অর্থ ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় জনসমাগম বেশি এমন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। করোনায় লাশ দাফন ও সৎকারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় জেলা-উপজেলা ও মহানগরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রচারণার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<117272 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1