নীলফামারী

কুয়াশায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

এস এ প্রিন্স
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এবার হেমন্তের কার্তিকেই শীত নামতে শুরু করেছে নীলফামারীতে। কৃষিনির্ভর এ জেলার ৯০% মানুষ কোনো না কোনোভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু অসময়ের এমন শীতে দুশ্চিন্তার ছাপ পড়েছে জেলার কৃষকদের মুখে। বিশেষ করে হালকা কুয়াশায় ধানগাছের ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছেন আমন চাষিরা। টুপামারী ইউনিয়নের দোগছি গ্রামের কৃষক রফিকুল জানালেন, অসময়ে হালকা শীতে আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। এছাড়া অন্য ফসলে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আক্রমণ শুরু করেছে। সাধারণত কার্তিক মাসে এমনটি হয় না। ফসল রক্ষায় এখন কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়া বিকল্প পথ নেই। কীটনাশকের জন্য এখন উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে। নীলফামারীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে উঁচু-নিচু জমিতে পানি জমেছে। বৃষ্টির পানি ও শীতের কারণে সবজি চাষে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দেখা দিতে পারে। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ে কর্মীরা কৃষকদের কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছেন। ঋতু পরিক্রমায় শীত আসতে এখনো মাসখানেক বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে ভোরে দেখা যায় ধানের শীষে জড়িয়ে রয়েছে মুক্তোর মতো শিশির বিন্দু। হালকা কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে রাস্তাঘাট। ভোরে ও রাত গভীর হলে হালকা গরম কাপড় গায়ে মুড়িয়ে নিতে হয়। এসব কিছুই বলে দেয় শীত নামছে এ জনপদে। নীলফামারী শহরের শাহীপাড়ার ওয়াহেদ আলী তুফান বলেন, কয়েকদিন অবিরাম বৃষ্টির কারণে এবার অনেক আগেই শীত অনুভব হচ্ছে। দিনে কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাতভর হালকা বৃষ্টির মতো টুপটাপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। পত্রিকা বহনকারী মাইক্রোবাস চালক ফারুকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গত বছর এমন সময় কোনো কুয়াশা দেখা যায়নি। গত দুই দিন ধরে ভোরে পত্রিকা নীলফামারীতে পৌঁছে দেওয়ার সময় হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। এদিকে শীতে করোনার দ্বিতীয়পর্যায়ে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে জনমনে শঙ্কাও রয়েছে। নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবির জানান, আসন্ন শীতে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য দ্বিতীয়পর্যায়ে সংক্রমণ মোকাবিলায় জেলার ৬টি উপজেলায় ডাক্তার, নার্স, আইসোলেশন ইউনিট, মহিলা ও পুরুষ বেড প্রস্তুতসহ পর্যাপ্ত ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে। আরো চাহিদা চেয়ে ফ্যাক্সবার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তবে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত শীতবস্ত্র চেয়ে জেলা প্রশাসন কোনো ফ্যাক্সবার্তা পাঠায়নি।