ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদের বিরুদ্ধে এবার অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালের্ যাব বাদী হয়ে চকবাজার থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন।
এদিকে ধানমন্ডি থানায় নৌ-বাহিনী কর্মকর্তা মারধর মামলার অন্যতম আসামি এবি সিদ্দিক ওরফে দিপুকে (৫২) টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তারের পর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পাশাপাশি এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ইরফান সেলিম ও জাহিদকেও ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। একই মামলায় আগে থেকে গ্রেপ্তার হয়ে একদিনের রিমান্ডে থাকা গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে রিমান্ড শেষে আজ আদালতে পাঠানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
র্
যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিলস্নাহ যায়যায়দিনকে বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইরফান সেলিমের বাসায় সোমবার অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার বিকালে চকবাজার থানায়র্ যাব বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় দুটি মামলায়ই আসামি করা হয়েছে ইরফান সেলিম ও জাহিদকে।
এদিকে নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও জাহিদকে শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। একই সাথে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবি সিদ্দিকী দিপুরও সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে ইরফান ও জাহিদের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, মদ্যপান ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যাওয়ায় ইরফান ও জাহিদকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। তিনি বলেন, রিমান্ডে মিজানুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও তিনি ঘটনার আদ্যপান্ত বর্ণনা করেছেন। এ বিষয়ে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবেন। পাশাপাশি ঘটনার এজাহারনামীয় ৪ আসামির বাইরে অন্য কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের 'সংসদ সদস্য' লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌ-বাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়। রাজধানীর কলাবাগান সিগন্যালের পাশে এ ঘটনা ঘটে। রোববার রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও সোমবার ভোরে ইরফানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ মামলায় সোমবার দুপুরে ইরফানকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। এছাড়া পুরান ঢাকায় তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৩৮টি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ভিপিএস সেট, অস্ত্রসহ একটি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ড্রোন এবং সাত বোতল বিদেশি মদ, ইয়াবা ও বিয়ার উদ্ধার করা হয়। মদ্যপান করা ও অনুমোদনহীন ওয়াকিটকি রাখায় কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছর করে জেল দেনর্ যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাতেই তাদের কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।