মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রায়পুরে মিল্কভিটায় অনিয়মের অভিযোগ

মুকুল পাটওয়ারী, রায়পুর (লক্ষ্ণীপুর)
  ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

দুধ উৎপাদন, বিপণন, গো-খাদ্য, ওষুধ ও উপকরণ ক্রয়-বিক্রয়ে যত অনিয়মের মধ্যেই চলছে লক্ষ্ণীপুরের রায়পুরের মিল্কভিটা দুগ্ধ শীতলীকরণ ও মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র। এখানকার তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার ফরহাদুল আলম গত ৪ বছরে প্রতিষ্ঠানটির কোটি টাকার ওপরে লোপাট করেছেন বলে খামারিদের অভিযোগ। মিল্কভিটার প্রধান কার্যালয়ের দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অভিযোগের তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। এ প্রকল্পে সরকার সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ও মিল্কভিটা অনুদান দেয় ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১৫ সালে দুগ্ধ শীতলীকরণ কারখানাটি উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে এখানে কারখানা ছাড়াও রয়েছে ২০৬টি মহিষ। এর মধ্যে ১০৪টি মা, ষাঁড় ৫টি ও বকনা বাছুর ১০৬টি। ৭০টি দুগ্ধ সমিতির মধ্যে চলমান রয়েছে ৩৩টি। প্রতিদিন এখন প্রায় দেড়শ' লিটার দুধ উৎপাদন হয়। প্রতিদিন প্রায় ৬শ' কেজি দানাদার খাদ্য ও ১২শ' কেজি খড় লাগে।

রায়পুরের খামার সমিতির সভাপতিদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, এ তত্ত্বাবধায়ক এখানে যোগদানের পর থেকে নিজের ইচ্ছামতো খড়কুটো ক্রয়ে লাখ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়ম করেন। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুইশ' লিটার মহিষের দুধ বাইরে ব্যক্তি পর্যায়ে বিক্রয়ের টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান সরেজমিন আসলে তদন্তে ধরা পড়লে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই টাকা জমা দেওয়া হয়। মহিষ প্রজনন কেন্দ্রের জন্য

বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ক্রয়ের নামে-বেনামে ভাউচারের মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করেন। দুগ্ধ কারখানার জেনারেটরের তেল কেনার নামে ভুয়া ভাউচারে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।। উলিস্নখিত ৪টি খাতসহ বিভিন্ন খাতের দুর্নীতির অভিযোগ এনে তত্ত্বাবধায়কের (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) অপসারণসহ কারখানার দুগ্ধ সংগ্রহ চালুকরণের দাবিতে ৫ খামার সভাপতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।

খামার সভাপতিরা আরও জানান, তদন্ত কর্মকর্তা ৮শ' খালি ভাউচার, ২শ' ওষুধ ভাউচার, স্থানীয় মিতালি বাজারের ডাক্তার কমলের স্বাক্ষর করা ৩০টি খালি ভাউচার, ডিজেলের ২ হাজার টাকার খালি ভাউচার, খড়ের মূল্য ১১ টাকা করে সাড়ে ৪ হাজার কেজির পরিবর্তে ১৪ টাকা করে সাড়ে ৭ হাজার টাকা ভাউচারে লেখা, ভ্যাট দেন বিক্রেতা, কিন্তু তিনি ভাউচার দেন ক্রেতার। দেড় বছর পর খামারিদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০৪ লিটার দুধের দাম জমা দেওয়া হয়। খুচরা দুধ বিক্রি করেন ও ৫০ হাজার টাকার খড় কেনা হলে ভাউচার করেন ৬৫ হাজার টাকা। উৎপাদন মূল্য থেকে কম মূল্যে পণ্য বিক্রি ও বিক্রির টাকা ফান্ডে জমা না করে মিল্কভিটায় কোটি টাকার অনিয়ম ও লুটপাট করেছেন।

রায়পুরের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ডাক্তার ফরহাদুল আলম বলেন, আমি ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর যোগদান করি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচেছ। খড় ক্রেতাদের ভাউচার না থাকায় ভাউচার বানিয়ে নিতে হয়। খামারিদের অভিযোগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তদন্ত চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) এডিশনাল জিএম (এডমিন) তোফায়েল আহাম্মদ বলেন, অভিযোগগুলোর বিষয়ে তিনিসহ দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি সরেজমিন কাজ করছে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়ে কথা বলা যাবে না। সহসা চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116678 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1