মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশে জাল ডলার ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল পারভেজের

গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকারোক্তি
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। ছবিটি শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টার থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা

গত ছয় বছরে অন্তত অর্ধশত কোটি টাকার জাল নোট ছাপিয়ে তা বাজারে ছেড়েছে পারভেজ। এছাড়া বিপুলসংখ্যক জাল ডলার ছাপিয়ে তা পাইকারি বিক্রি ও বাজারজাত করেছে। এর আগে বেশ কয়েকবার ধরা পড়লেও কিছুদিন জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসতে তার খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। গত ২৩ অক্টোবর প্রায় ৬০ লাখ টাকার জাল নোটসহ গ্রেপ্তারকৃত কাজী মাসুদ ওরফে পারভেজ গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেছে।

জাল নোট প্রস্তুতকারী চক্রের এ হোতা গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, জাল টাকা তৈরির কাজটিতে সে এতটাই সিদ্ধহস্ত যে, ঝানু ব্যাংকাররাও তার তৈরি জাল নোট সহজে ধরতে পারতেন না। এ কারণে জাল নোট বিক্রি চক্রের খুচরা ক্রেতাদের কাছে তার কদর ছিল। এছাড়া জাল ডলার তৈরিতেও সে যথেষ্ট দক্ষ। গত কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক জাল ডলার সে বাজারে ছেড়েছে। সম্প্রতি জাল ডলারের বড় চালান ছাপিয়ে তা বিদেশের বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিল। এ ব্যাপারে সে তার চক্রের সদস্যদের নিয়ে

বেশকিছু প্রস্তুতিও নিয়েছিল।

শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গত ২৩ অক্টোবর রাজধানীর কোতোয়ালি ও আদাবর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জাল নোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূলহোতা কাজী মাসুদ পারভেজসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃত বাকি সদস্যরা হলো- মো. মামুন, শিমু, রুহুল আলম, সোহেল রানা ও নাজমুল হক।

তাদের হেফাজত থেকে ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার মূল্যমানের জাল টাকা এবং ১১৩টি জাল ১০০ ডলারসহ দুই বান্ডেল ছাপানো জাল নোটের কাগজ, একটি ল্যাপটপ, দুটি স্ক্যানার, একটি লেমিনেটর, দুটি প্রিন্টার, ১২টি ট্রেসিং পেস্নট, পাঁচ রিম জাল নোটের ছাপানো কাগজ, আট বোতল বিভিন্ন রং, জাল টাকার সিরিয়াল ক্রমিক নম্বর দেওয়ার সিল ও একটি প্রিমিও প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়।

হাফিজ আক্তার আরও জানান, এ চক্রটি গত ছয় বছর ধরে জাল নোট তৈরি করে আসছিল। তারা জাল নোট ও জাল ডলার তৈরির পর খুচরা ও পাইকারিভাবে বিক্রি ও বাজারজাত করতো। চক্রটি সারা বছর জাল নোট তৈরি করলেও ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে তা বাজারে ছাড়তো। পারভেজের নামে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। এর আগেও সে কয়েকবার ধরা পড়লেও জামিনে বের হয়ে এসে আবার পুরানো পেশায় যুক্ত হয়েছে। তাই এবার যাতে সে দ্রম্নত জামিনে বের হতে না পারে এজন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে।

ডিবির তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সোমা যায়যায়দিনকে বলেন, এ চক্র জাল টাকা ও ডলার তৈরিতে এতটাই পারদর্শী যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে তা ধরা অনেকটাই অসম্ভব। পারভেজ চক্রের তৈরি জাল নোট আসল টাকা ও ডলারের পাশাপাশি রাখলে তা অভিজ্ঞ ব্যক্তির পক্ষে শনাক্ত করাও কঠিন। এ চক্রকে দ্রম্নত গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে অল্প সময়ের মধ্যেই আরও বিপুলসংখ্যক জাল টাকা ও ডলার বাজারে ছড়িয়ে পড়তো। সোমা জানান, এ চক্রের নেপথ্যে আরও বড় কোনো গডফাদার রয়েছে কি না তা খুঁজে বের করতে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছেন।

ডিবি তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. বায়েজীদুর রহমান যায়যায়দিনকে জানান, পারভেজ চক্র জাল ডলার তৈরি করে এর বড় চালান বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল। এ ব্যাপারে তারা বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছিল। তবে সম্প্রতি গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ায় তাদের সে পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116468 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1