মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
আজ সেই ২৬ সেপ্টেম্বর

১৯ বছরেও শেষ হয়নি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

সময়ের পরিক্রমায় কেটে গেছে ১৯ বছর; কিন্তু এখনো ঝুলে আছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায়। ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিলেটে নির্বাচনি জনসভার দিন হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি)। আজ সেই হত্যাচেষ্টা ঘটনার ভয়ঙ্কর দিন। আগের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে জনসভাস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের পার্শ্ববর্তী এলাকা ফাজিলচিশতে ডা. আরিফ আহমদ রিফার বাসায় বোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হয় দুই জঙ্গি। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়। আলোচিত এ মামলার ১৯ বছর পূর্ণ হলেও এখনো শেষ হয়নি মামলাটি। সিলেটের অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইবু্যনালে এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন বিশেষ ট্রাইবু্যনাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মফুর আলী বলেন, আদালত থেকে সাক্ষীদের প্রতি সমন, ওয়ারেন্ট ইসু্য করা হলেও তেমন কোনো গতি নেই। যারা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবেন তারাই নীরব রয়েছেন। পুরানো মামলাগুলো দ্রম্নত নিষ্পত্তি হলে আদালতের কার্যক্রম আরও গতি পাবে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত এ মামলায় ৪৭ সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত। জননিরাপত্তা আদালতে মামলাটি ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রম্নয়ারিতে আসে। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি জঙ্গি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। চলতি বছরের ৪ মার্চ হোটেল আল আকসার কর্মচারী সেলিম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দেন। এ মামলায় উলেস্নখযোগ্য সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল (কোতোয়ালি থানার সাবেক এসআই) ও অভিযোগপত্র দাখিলকারী সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক সিলেট ক্যাম্পের সাবেক পুলিশ পরিদর্শক প্রণব কুমার রায়সহ ৪ জন। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী ১০ নভেম্বর। ওইদিন আদালতে সাক্ষ্য দেবেন মিজানুর রহমান ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. কামাল পারভেজসহ ৩ জন।

২০০১ সালে আদালতে স্বীকারোকিমূলক জবানবন্দি দেয় ঘটনাস্থল থেকে জনতার হাতে আহত অবস্থায় আটক হওয়া হুজির সদস্য মাসুদ আহমেদ ওরফে শাকিল। ২০০৬ সালের ৫ অক্টোবর গ্রেপ্তারকৃত মাওলানা আবু সাঈদ সিলেট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা স্বীকার করেন।

জবানবিন্দতে সাঈদ বলেন, ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরের মধ্যে শেখ হাসিনার শাহজালাল মাজারে যাওয়ার কথা ছিল। পরে খবর আসে শেখ হাসিনা শাহ পরান মাজারে যাবেন। এদিকে দুই মাজারে ওতপেতে থাকা কিলাররা জানতে পারে শেখ হাসিনা সরাসরি জনসভাস্থলে যাবেন। এরপর জঙ্গিরা জনসভাস্থলের অদূরে ফাজিশচিশত এলাকায় তাদের ভাড়া করা মেসে গিয়ে ওঠে। ওই মেসে রাত ৮টার দিকে বোমাগুলো নাড়াচাড়া করার সময় বিস্ফোরিত হয়।

২০০১ সালের ২ অক্টোবর সিলেটের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং একই বছরের ১১ অক্টোবর ঢাকায় জেইসিতে প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে শাকিল বলেছিলেন, '২০০০ সালে তাবলিগে এহতেশাম নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তার মাধ্যমে পরিচয় হয় ডা. আরিফ আহমদ রিফার সঙ্গে। ডাক্তার সাহেব সিলেটে একটা হাসপাতাল ও সাভারে একটা কোল্ড স্টোরেজ করতে চান। এজন্য লোক দরকার। সেই পরিচয়ের সুবাদে ২০০১ সালে সিলেটে আসি ও সুরমা ভ্যালি রেস্টহাউসে উঠি। রুমটি ডা. রিফার নামে বুক করা ছিল।

সূত্র জানায়, বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা করেন সিলেট কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আল খায়ের মাতুব্বর। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার মাস দুয়েক আগে আবু আল খায়ের মাতুব্বর ডা. রিফার মানচুরিয়া কালার ল্যাবে অভিযান চালান। তখন তিনি ছিলেন সিলেট পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি। তার কাছে খবর ছিল, সেখানে বিপুল বিস্ফোরক মজুত ও সন্দেহজনক লোকজন ছিল। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার সময় সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন আবু আল খায়ের মাতুব্বর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<113298 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1