৪৮ জন পেলেন ধানের শীষের টিকিট

স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে নতুন পদ্ধতি বিএনপির তৃণমূলে স্বস্তি

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

হাসান মোলস্না
স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব তৃণমূল নেতাদের হাতে যাওয়ায় বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। পুরনো পদ্ধতির কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশ আমলে নিচ্ছেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের নেতারা। ফলে সুযোগ্য নেতাদেরই এবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা), পৌরসভা মেয়র এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানপদে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রার্থী মনোনয়নে এবার কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হবে না। এমনকি স্থানীয় নেতাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে মনোনয়ন দেওয়ার পর ওই জেলা বা থানার কেন্দ্রীয় কোনো নেতা সুপারিশ করলেও সেটা রাখা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, হাইকমান্ড দলের সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ হিসেবে ও তৃণমূল নেতাদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার রাতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৪৮টি মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা নিজ হাতে গুলশান কার্যালয় থেকে চিঠি নিয়েও গেছেন। গুলশান অফিস সূত্র জানায়, সারাদেশ থেকে আগত এসব প্রার্থীর তালিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রস্তুতের জন্য সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে। তিনি বলেন, প্রাথমিক ধাপে প্রার্থীদের সুপারিশ তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে এসেছে। সেটা দলের মহাসচিবের কাছে দেওয়া হয়েছে। তিনি স্বাক্ষর করে প্রার্থীদের কাছে হস্তান্তরও করেছেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষমতা তৃণমূলে গেলেও আরও স্বচ্ছতা বাড়াতে বাছাই কমিটিতে নেতার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব নেতা বলেন, উপজেলা পরিষদের জন্য জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ সদস্য মিলে সুপারিশ করার কথা বলা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এই পদে নির্বাচন করতে চান খোদ জেলার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকও। এই পদে বাছাইয়ের জন্য যদি সংশ্লিষ্ট জেলার সব থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামত চাওয়া হতো তাহলে বাছাই প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ হতো। আবার ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্রে যদি ওয়ার্ডের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের মতামত নেওয়া হতো তাহলে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি যোগ্য প্রার্থী বেরিয়ে আসত। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তৃণমূল তাদের নেতৃত্ব বাছাই করবে, এটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রম্নটি থাকলে বা এই প্রক্রিয়াকে আরও সমৃদ্ধ করার দরকার হলে তা করা হবে। ৪৮ জন পেলেন ধানের শীষের টিকিট বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বুধবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৮ জনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান- ৩৭ জন। উপজেলা চেয়ারম্যান- ৮ জন, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান পুরুষ ২ জন, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান নারী ১ জন। মনোনয়ন প্রাপ্তদের তালিকা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মো. মকলেছুর রহমান, মান্দা; মো. নুর উন নবী, যশোর সদর; মো. আব্দুল মজিদ, পাইকগাছা; মো. মতিয়ার রহমান খান, শরণখোলা; মো. নরুল হক আফিন্দী, জামালগঞ্জ; মো. আবদুস শুক্কুর পাটোয়ারী, মতলব; নাদীরা আক্তার, শিবচর; মো. সাইফুল আলম, দাউদকান্দি। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান রাশেদ, দিনাজপুর সদর; ফরিদা ইয়াছমিন, দাউদকান্দি; রুহুল আমিন, দাউদকান্দি। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন মীর, বড়িবাড়ি, ইটনা, কিশোরগঞ্জ; আফজাল হোসেন, লক্ষ্ণীপাশা, গোলাপগঞ্জ, সিলেট; মো. আব্দুর রফ আল মামুন, সাদীপুর, ওসমানী নগর, সিলেট; আসকার আলী, সাচার, কচুয়া, চাঁদপুর; মো. অলি উল্যা, ইছাপুর, রামগঞ্জ, লক্ষ্ণীপুর; মো. ইয়াকুব, সুয়াবিল, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম; মো. আসিফ আকতার, হারামিয়া, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম; মো. সুফি মিয়া, মির্জাপুর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার; পারভেজ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহানপুর, মাধবপুর, হবিগঞ্জ; মো. পারভেজ হোসেন, আদ্র, বরুড়া, কুমিলস্না; মাসুদ করিম, মেহের দক্ষিণ, শাহরাস্তি, কুমিলস্না; মো. সেলিম সরকার, সুলতানাবাদ, মতলব উত্তর, চাঁদপুর; মো. আক্তার হোসেন, জহিরাবাদ, মতলব উত্তর, চাঁদপুর; মোস্তফা কামাল, গেইট উত্তর, কচুয়া, চাঁদপুর। নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া, কেরোয়া, রায়পুর, লক্ষ্ণীপুর; তোফায়েল আহমেদ, চন্দ্রগঞ্জ, উপজেলা সদর, লক্ষ্ণীপুর; জয়নাল আবেদিন, নানুপুর, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম; মো. আবু নাসের চৌধুরী, আধুনগর, লোহাগড়া, চট্টগ্রাম; মো. খোরশেদ আলম শিকদার, লোহাগড়া, লোহাগড়া, চট্টগ্রাম।