ঢাকা-১৮ উপনির্বাচন

নালিশের প্রতিযোগিতা বিএনপিতে

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ঘিরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর লিখিত অভিযোগের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন আগ্রহী প্রার্থীরা। বিএনপির সাতজন মনোনয়নপ্রত্যাশী অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত সিটি নির্বাচনে এই আসনের অন্তর্গত বিএনপি সমর্থিত আটজন কাউন্সিলর প্রার্থীও জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আর এস এম জাহাঙ্গীর এ আসনের অন্তর্গত সাতটি থানা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ-সংগঠনের একাংশ তার সঙ্গে আছে দাবি করে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন এই আসনের সাতজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। আবেদনে তারা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে হামলা ও আহত করার ঘটনায় এস এম জাহাঙ্গীরকে অভিযুক্ত করে সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন। এই আসনে বিএনপির নয়জন নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী। এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, কফিলউদ্দিন আহমেদ, ইসমাইল হোসেন, আক্তার হোসেন, মোস্তফা কামাল, বাহাউদ্দিন সাদী ও আব্বাসউদ্দিন লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজধানী গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎকারে প্রায় সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর সমর্থকই শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। হঠাৎ করে মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীরের বাহিনী লাঠিসোটাসহ আরেক মনোনয়নপ্রার্থী এম কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করে। হামলায় বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন, এস এম রাজ্জাক বকুল, ইয়াকুতুর রহমান, রায়হান, আব্দুর রাজ্জাক, সুলতান, বকুল মন্ডল, মাসুদ মিয়া, মহিউদ্দিন, বদরুল আলমসহ আরও বেশ কয়েকজন মারাত্মক আহত হন। মনোনয়নপ্রত্যাশী সাত নেতা ঢাকা-১৮ এর নির্বাচনের তফসিল নভেম্বর মাসের আগে ঘোষণা হচ্ছে না বলে সময় নিয়ে হলেও এই তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও বহিস্কার না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা ঘোষণা না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে এ আসনের অন্তর্গত সাতটি থানা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অঙ্গ-সংগঠনের একাংশ জাহাঙ্গীরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমন দাবি করে চিঠি দিয়েছেন মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদকে চিঠি দিয়েছেন জাহাঙ্গীর। চিঠিতে ওই আসনের অধীন দক্ষিণ খান, উত্তরখান, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, তুরাগ, উত্তরা পূর্ব ও উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা স্বাক্ষর করেন। স্থানীয় নেতাদের তার প্রতি সমর্থনের বিষয় জানিয়ে দলের উচ্চপর্যায়ে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি যায়যায়দিনকে জানান এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, দেড় যুগের বেশি এ এলাকার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে ছিলেন। মনোনয়নের ক্ষেত্রে এসব বিবেচনা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন আগ্রহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও বাহাউদ্দিন সাদী। তারা বলেন, যে নেতা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাতে পারে। তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। এজন্য হাইকমান্ডকে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে কিছু বিষয় অবহিত করা হয়েছে।