শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দরিদ্ররা বঞ্চিত :সিপিডি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে, সেখানে দরিদ্ররা কম সুবিধা পাচ্ছে। বিপরীতে যারা দরিদ্র না তারা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এমন তথ্য দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বুধবার 'উত্তর-পশ্চিম জেলাসমূহে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের কার্যকারিতা' শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরে সিপিডি। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশ যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় সিপিডির মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়স্ক ভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের উপবৃত্তি এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা- এই পাঁচ খাতে যারা দরিদ্র না তারা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এসব কর্মসূচির আওতায় যাদেরকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে ৩৪ দশমিক ৪০ শতাংশ দরিদ্র। বাকি ৬৫ দশমিক ৬০ শতাংশই দরিদ্র না।

নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার প্রায় দেড় হাজার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিপিডি।

সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদেরকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে তাদের ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ দরিদ্র। বিপরীত সুবিধা পাওয়াদের ৬৭ দশমিক ৮০ শতাংশ দরিদ্র না। একইভাবে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে উপবৃত্তি পাওয়াদের ৭২ শতাংশ দরিদ্র না। আর প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে উপবৃত্তি পাওয়াদের ৬৩ দশমিক ৮০ শতাংশ দরিদ্র না।

বিপরীতে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মাতৃত্বকালীন ভাতা এই দুই কর্মসূচির আওতায় দরিদ্ররা তুলনামূলক ভালো সুবিধা পাচ্ছে। তবে এই দুই প্রকল্পেও দরিদ্রদের থেকে দরিদ্র না এমন ব্যক্তিরা বেশি সুবিধা পাচ্ছে।

এর মধ্যে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাওয়াদের ৪৯ দশমিক ৬০ শতাংশ দরিদ্র এবং দরিদ্র না ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর মাতৃত্বকালীন ভাতা পাচ্ছে যারা তাদের ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ দরিদ্র এবং ৫৮ দশমিক ৫০ শতাংশ দরিদ্র না।

সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রমুখ। আর আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তাজুল ইসলাম বলেন, গরিব, হতদরিদ্র, বয়স্ক ভাতার তালিকা স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়। তখন মেম্বার-চেয়ারম্যানরা দেশপ্রেমে প্রবাহিত না হলে সঠিক তালিকা হয় না। সে জন্য এটার অনেক দুর্বলতা আছে। এটাকে আমাদের আরও অ্যাড্রেস (চিহ্নিত) করতে হবে, যাতে করে আমরা একটি পারফেক্ট ডাটাবেজ তৈরি করতে পারি। তাহলে মানুষ ন্যায়বিচার পাবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মেম্বার-চেয়ারম্যানরা যে তালিকা তৈরি করেন, সেটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। এখানে মেম্বার-চেয়ারম্যানরা তাদের স্বজনদের ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকার যতই আগের চেয়ে বেশি উদ্যোগী হোক এবং বরাদ্দ করুক, এখনো পর্যাপ্ততার জায়গায় পৌঁছায়নি। দেশ ও জাতি এখনো যে পরিমাণে দরিদ্র এবং বিভিন্ন ধরনের ভঙ্গুরতার মধ্যে আছে তাদের জন্য আরও বেশি সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন আছে।

এ সময় কয়েকটি ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- স্বল্পদক্ষ নারীদের অংশগ্রহণ আরও ব্যাপকহারে বাড়ানো, নগর দরিদ্রদের ক্ষেত্র আরও বাড়ানো, প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ ও চরম দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকায় কর্মসূচির আওতা বাড়ানো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112340 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1