শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

এই সরকার ব্যর্থ হওয়া মানে আমাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া : ইলিয়াস কাঞ্চন

বিনোদন রিপোর্ট
  ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
এই সরকার ব্যর্থ হওয়া মানে আমাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া : ইলিয়াস কাঞ্চন
এই সরকার ব্যর্থ হওয়া মানে আমাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া : ইলিয়াস কাঞ্চন

ঢাকায় কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা দুদিন ধরেই আলোচনায়। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীবাসীর জনজীবনেও! এ নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। আবার অন্যদিকে চট্টগ্রামে ইসকনকে ঘিরে যে নৈরাজ্যকর ঘটনা ঘটে গেল তাও অত্যন্ত ভীতিজনক। যা সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে দেশটাকে অচল করে দেওয়ার নামান্তর। এবার এসব বিষয় নিয়ে সরব নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবস্থান নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

সোমবার রাতে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভে এসে বলেন, মানুষ জানতে পারছে, ছাত্ররাও জানতে পারছে; কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কেন বিষয়গুলো আগে থেকে জানতে পারছে না? সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে এ জিনিসগুলো কেন থামানো হচ্ছে না? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো দেখছি ছাত্রদের দুই গ্রম্নপের সংঘর্ষ দাঁড়ায়ে দেখেন, এটা হলো কীভাবে? এভাবেই প্রশ্নগুলো ছুঁড়ে দেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

তাছাড়া সেনাবাহিনীকে যে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে সেটাও বা কতটুকু কাজে আসছে তাও দেখার বিষয়। দেখা গেছে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী সেখানকার লোকজনের নৈরাজ্য দমন করেছে। এরপর সে জেলার লোক সেনাবাহিনীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছে। অথচ এই নৈরাজ্য দমনের জন্যই সামরিক কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রথমে দু'মাস দিয়ে এরপর তা আরও ৬০ দিন বাড়ানো হয়েছে। যুক্ত হয়েছে তাতে কোস্টগার্ড ও বিজিবি। তারপরও দেশে একের পর এক এনার্কি চলছেই। এদেশের স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতে শুধু ছাত্র-জনতার অবদান আছে তাও তো নয়, সেনাবাহিনী কার্যকরভাবে সহযোগিতা না করলে তো তা সম্ভব হতো না। যেমন '৭১-এও সেনাবাহিনী মাঠে না থাকলে সেই মুক্তিযুদ্ধও যেমন কখনো সফলতা পেত না, তেমনি ২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট বিপস্নবও সফল হতো না। কাজেই আওয়ামী লীগ যে বিপুল টাকা লুটপাট করেছে সেই টাকাতেই তারা এখন এই চোরাগোপ্তা এনার্কি চালাচ্ছে। কিন্তু সবাইকে নির্লিপ্ত হয়ে গেলে তো এই এনার্কি বন্ধ করা যাবে না। দেশটা একসময় খেমারুজ হয়ে যাবে। একা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষেও কঠিন। ঘরের আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও বাইরের শত্রম্নরাও ওঁত পেতে আছে কখন সরকার ফেল করে। তাই কোনো প্রকার দূরত্ব না রেখে সরকারের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার পাওয়া আর্মিকেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।

ফেসবুক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও কঠোর নজরদারিতে আনতে হবে। যারা বাকস্বাধীনতা হরণ করেছিল তারাই বর্তমান সরকার থেকে বাকস্বাধীনতা পেয়ে তার ব্যবহার করে দেশটা ব্যর্থ করে দিতে তৎপর আছে। প্রয়োজনে দেশটাকে পরাধীন বানিয়ে আরেক কাজী লেন্দু দর্জি আনার ষড়যন্ত্র করতেও প্রস্তুত। তাদের রাষ্ট্রের প্রয়োজন নেই। তারা

'পৃথক ভূমি' পেলেই হলো।

ইলিয়াস কাঞ্চন তাই আরও বলেন, আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, এই সরকারকে ফেল করানো যাবে না। এই সরকার ফেল মানে আমাদেরও ফেল। আমাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। এত রক্ত, বহু মানুষ এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসবই তো বৃথা যাবে যদি সরকার ফেল করে।

এ সময় ছাত্রদের এনার্কি নিয়েও কঠোর কথা বলেন তিনি। কাঞ্চন বলেন, ছাত্রদের এক কলেজ থেকে আরেক কলেজে গিয়ে মারামারির যে ঘটনা ঘটল, যে উলস্নাস এক পক্ষের ছাত্রদের দেখেছি, ভাঙচুর করে

যে মজা পাচ্ছে- এটা তো দেখি একটা খেলা মনে করছে ওরা। এদের যদি কড়া শাসন না করা হয় তাহলে তো থামবে না।

এ সময় সরকারে থাকা অযোগ্যদেরও সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান ইলিয়াস। প্রশংসা করেন সরকারে থাকা সমন্বয়কদের মধ্যে দুই উপদেষ্টার। সরকারের উদ্দেশে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, যারা অযোগ্য আছে, তাদের সরিয়ে দেওয়াই হবে উচিত সিদ্ধান্ত। তাদের বদলে নতুন লোক নেন। দুই সমন্বয়ক যারা উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, তারাই তো সব ঠিকঠাক করছেন। তারা তো ঘুমাতেও পারছেন না। সব কাজ তো তাদেরকেই করতে দেখি, বাকিরা কই? তাদের তো কোনো কথাই দেখি না।

এ সময় হতাশা প্রকাশ করে দেশবাসীর উদ্দেশে 'নিরাপদ সড়ক চাই'-এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমার দেশ এবং দেশের মানুষ, আপনাদের নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত। আপনারা জানেন, নিজের জন্য কিছু আমি বলি না। জীবনে দেশ ছেড়ে গেলাম না কোথাও। ৩২ বছর ধরে একটা মুভমেন্ট নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আছি, সেই জায়গাটাতেও এখনো

কিছু করতে পারলাম না। সেখানেও কোনো রিফর্ম

নাই, কিচ্ছু নাই। চাঁদাবাজি তো আগের মতোই

চলছে, অনিয়ম হচ্ছে- সবকিছুই হচ্ছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই যে ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালারা দেখেন এখন কী বলছে! মনে হচ্ছে,সবাই এখন দেশটারে খুবলে খাবে। কারো

কোনো ধরনের দরদ আমি দেশের প্রতি দেখি না। দেশটা চলবে কীভাবে, আমিতো এটা বুঝতেছি না।

এর থেকে পরিত্রাণ পেতে বর্তমান সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান বহু দর্শকপ্রিয়

সিনেমার এই অভিনেতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে