সাধারণ মানুষের বিয়েবিচ্ছেদের খবর নির্দিষ্ট গন্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু তারকাদের বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। আলোচনা হয় অনেক। সমালোচনাও কম হয় না। তারকাদের প্রতি বাড়তি আগ্রহের কারণেই এমনটি ঘটে। কেউ কেউ তাদের বিচ্ছেদে দুঃখ প্রকাশ করে। কেউ কেউ শামিল হয় নানা রকম মুখরোচক সমালোচনায়। অনেকেই করেন উপহাস। তেমনি সিনে ইন্ডাস্ট্রিজগতের অন্যতম বলিউড।
বলিউডে সম্পর্কের ভাঙা-গড়া চলতেই থাকে। কখনো পেশাগত কারণে, কখনো পরকীয়ায় জড়িয়ে। বলিউডে অনেক জনপ্রিয় তারকার দাম্পত্যজীবনের ইতি ঘটেছে নানা করণে।
তবে ভারতে এই তারকাদের বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রি শীর্ষ বা আইকনিক তারকাদের হার তুলনামূলকভাবে কমই বলতে হয়। তবে মাঝারি বা নিম্নমাঝারি তারকাদের ক্ষেত্রে এই বিয়েবিচ্ছেদের হার খুব চড়া। এই বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে মাঝারি-নিম্নমাঝারি তারকারা আবার অনেকে শোবিজে আলোচনায় থাকতেও এটা করে থাকেন। কারণ তারাও ভালো করেই জানেন যে, বিয়েবিচ্ছেদ হলে বা বিচ্ছেদের গসিপ ছড়ালে মিডিয়াগুলোও বেশ ফলাও করে তা প্রচার করে। মিডিয়াগুলোও চায় এরকম কাহিনি প্রচার পাক। মূলত এই প্রচারে ভাইব্রেন্ট থাকতেই মাঝারি-নিম্নমাঝারি তারকাদের অনেকে এমন বিয়েবিচ্ছেদের খেলা খেলে থাকেন। বলিউডের মাঝারি-নিম্নমাঝারি তারকাদের বিচ্ছেদ নিয়ে আজকের প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে।
বলিউডে একসময়ের পারফেক্ট জুটি ছিলেন হৃত্বিক এবং সুজান। একে অপরকে ভালোবেসে তারা গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। প্রেম এবং বিয়ের দীর্ঘ ১৭ বছরের সম্পর্ক তারা ছিন্ন করেন ২০১৩ সালে। এই জুটির বিয়েবিচ্ছেদ সবাইকে অবাক করেছিল। তবে এই জুটির বিচ্ছেদের সঠিক কারণ সবারই অজানা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঠিকই বজায় রেখেছেন তারা।
অভিনেত্রী কারিশমা ২০০৩ সালে বিয়ে করেছিলেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরকে। এই দম্পতি ২০১৩ সালে বিচ্ছেদ ফাইল করেন। তবে এই জুটির বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে একাধিক মন্তব্য শোনা যায়। কেউ বলে সঞ্জয় বিভিন্ন মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। আবার কেউ বলে কারিশমা স্ত্রী, মা এবং বউমা হিসেবে ব্যর্থ ছিলেন। ২০১৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
অমৃতা সিং এবং সাইফ আলী খানের বিয়ে ছিল একটু ভিন্ন স্বাদের। তাদের ধর্ম আলাদা হওয়ার পাশাপাশি ছিল বয়সের বিস্তর ফারাক। অমৃতা ১৩ বছরের বড় ছিল সাইফের থেকে। অমৃতা বিয়ের জন্য শিখ ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯১ সালে তারা প্রেম করে বিয়ে করেন। ১৩ বছর একসঙ্গে থেকে তারা বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে কারিনা কাপুরের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন সাইফ।
১৯৮৬ সালে পরিবারের অমতে রীনা দত্তকে বিয়ে করেন আমির খান। কারণ রীনা ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী, আমির মুসলিম। এ সময় আমিরের বয়স ছিল ২১ আর রীনার ১৯ বছর। কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন এই জুটি। এ দম্পতির জুনায়েদ ও ইরা নামে পুত্র-কন্যা রয়েছে। ভালোই চলছিল এই জুটির সংসার। কিন্তু ২০০২ সালে তাদের বিয়েবিচ্ছেদ ঘটে। রীনার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কিরণ রাওয়ের সঙ্গে আমিরের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। এই অভিনেতার 'লগান' সিনেমার সেটেই তাদের পরিচয়। রীনার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আমির মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, তখন কিরণের সঙ্গে তার দেখা হয়। তার আগে কোনো সম্পর্কে ছিলেন না তারা। একসময় বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় এক বছর লিভ টুগেদারের পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন এই জুটি। ২০০৫ সালে বিয়ে করেন তারা। এ সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। ২০২১ সালের ৩ জুলাই হঠাৎ কিরণ রাওয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন আমির। এক যৌথ বিবৃতি তারা জানান, স্বামী-স্ত্রী হয়ে নয়, সহযোগী এবং একে অন্যের পরিবার হিসেবে থাকবেন তারা।
মালাইকা আরোরা এবং আরবাজ খানের বিচ্ছেদ ছিল বলিউডের অন্যতম চর্চিত বিচ্ছেদ। একটি কফির বিজ্ঞাপন করার সময় দুজনের পরিচয় হয়েছিল। তারা প্রেমে পড়েন এবং ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন। এ জুটি সুদীর্ঘ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টানেন ২০১৭ সালে। শোনা যায়, দুজনের মতবিরোধ এবং আরবাজের অর্থনৈতিক অস্থিরতা তাদের বিয়েবিচ্ছেদের কারণ।
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় দুই তারকা নাগা চৈতন্য ও সামান্থা রুথ প্রভু। জুটি হিসেবেও তারা বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু বিয়ের ৪ বছরের মাথায় তাদের সংসারে ভাটা পড়ে। তারা হাঁটেন বিচ্ছেদের পথে। ২০২১ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। আর তাদের এ বিচ্ছেদের মূল কারণ ছিল সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির আগমনে। এদিকে তেলেঙ্গানার বন ও পরিবেশমন্ত্রী কোনডা সুরেখা দাবি করেছিলেন, সামান্থা ও নাগার বিচ্ছেদের পেছনে রয়েছে এক সুগভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত। কিন্তু অভিনেতা নাগা চৈতন্য এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। এ অভিনেতা রাজনীতিবিদকে তার মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন।
২০০০ সালে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল ফারহান-অধুনা দম্পতি। অতঃপর ১৫ বছরের সংসার জীবন কাটানোর পর ২০১৬ সালে তাদের ডিভোর্স হয়। তাদের ঘরে দুটি মেয়ে রয়েছে।