ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না শমী কায়সার
প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিনোদন রিপোর্ট
ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না বলে মন্তব্য করেছেন শমী কায়সার। তিনি বলেন, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। কোনো ধরনের অর্থ দেয়নি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা অন্যায়। আমি কখনো কাউকে নিয়ে কটাক্ষ করেনি। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন তিনি। শুনানি শেষে ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে উত্তরা পূর্ব থানার করা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগের দিন মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম ও পূর্ব থানা পুলিশ। এর পরদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শমী কায়সারকে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।
জানা যায়, ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ী গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুলস্নাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি আবদুলস্নাহ আল-মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। শমী কায়সার এ মামলায় ২৪ নম্বর ও তাপস ৯ নম্বর এজহারনামীয় আসামি।
শমী কায়সার নব্বই দশকের শুরু থেকে টেলিভিশনের প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন। জনপ্রিয়তার চূড়ায় অবস্থান করা অভিনেত্রী শমী কায়সার হঠাৎ বদলে গেলেন। এলেন রাজনীতির মাঠে। কিন্তু নানা কারণে রাজনীতিতে জনপ্রিয় হতে পারেননি। আওয়ামী লীগেও তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। যে কারণে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি।
শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুলস্না কায়সার ও লেখক, গবেষক, শিশু সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য পান্না কায়সার দম্পতির মেয়ে শমী। শহীদ পরিবারের হিসেবে পরিচিত হলেও শমী এবং তার মা পান্না কায়সার উভয়ই ছিলেন নানা কারণে বিতর্কিত। যা কখনো শিল্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিক পরিবারের সঙ্গে মেলে না। আর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেই বিতর্ককে তারা আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যদিও শহীদুলস্না কায়সার বাম আদর্শবাদী রাজনীতির কমিউনিস্ট ছিলেন।
তবে প্রকৃতিপ্রদত্ত ন্যাচারাল অভিনয় করতে পারার সক্ষমতা শমী কায়সারের জীবনে সেসব বিতর্ক আড়াল করে দিয়েছিল। কিন্তু রাজনীতির পঙ্কে পা রেখে সেই সুনামও বোধ হয় ধরে রাখতে পারছেন না শমী। একবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের 'চোর' বলে সম্বোধন করেও বিতর্কিত হয়েছিলেন শমী। সেবার দল ক্ষমতায় থাকায় পার পেয়ে গিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন তিনি ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি ছিলেন। হয়েছিলেন এফবিসিসিআই পরিচালকও। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৪ আগস্ট ই-ক্যাব সভাপতির পদ ছাড়েন শমী কায়সার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে তরুণদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন শমী কায়সার। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে শমী কায়সারের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা হয়।