একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর নিজ বাসায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মাসুদ আলী খান। শারীরিক অসুস্থতার জন্য অনেকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চলছিল তার। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন এই বরেণ্য অভিনেতা।
মাসুদ আলী খানের দীর্ঘদিনের সহকারী রবিন মন্ডল বলেন, 'অভিনেতার এক ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। আগামী ১৩ নভেম্বর তার দেশে আসার কথা রয়েছে। তার সিদ্ধান্তের ওপরই সব নির্ভর করছে। তবে অভিনেতার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে। ধারণা করছি, সেখানেই দাফন করা হবে।'
১৯২৯ সালে ৬ অক্টোবর মানিকগঞ্জের পারিল নওধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাসুদ আলী খান। বাবা আরশাদ আলী খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। তার মায়ের নাম সিতারা খাতুন। ১৯৫২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন মাসুদ আলী খান। দুই বছর পর জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।
১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পর নূরুল মোমেনের 'ভাই ভাই সবাই' নাটকের মাধ্যমে টিভি নাটকে তার অভিষেক হয়। সাদেক খান পরিচালিত 'নদী ও নারী' দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন এই শিল্পী। পাঁচ দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রায় ৫০০ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। ২০২৩ সালে এ অভিনেতাকে একুশে পদক প্রদান করা হয়।
তার অভিনীত কয়েকটি সিনেমা- 'দুই দুয়ারি', 'দীপু নাম্বার টু', 'মাটির ময়না'। তার অভিনীত আলোচিত কয়েকটি নাটক হচ্ছে 'কূল নাই কিনার নাই', 'এইসব দিনরাত্রি', 'কোথাও কেউ নেই'।
মাসুদ আলী খান ১৯৫৫ সালে বিয়ে করেন তাহমিনা খানকে। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেতার এক ছেলে ও এক মেয়ে। চাকরিজীবনে সরকারের নানা দপ্তরে কাজ করেছেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন।