পূজায় মন ভালো নেই অপুর

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বিনোদন রিপোর্ট
পূজায় রং হাতে অপু বিশ্বাস
শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। চারদিকে উৎসবের আমেজ চলছে। এ উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত রয়েছেন সবাই। এমনকি এ উৎসবেই মিলেমিশে একাকার বিনোদন জগতের তারকারাও। ব্যতিক্রম নন ঢালিনউড অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসও। এ বছরের পূজা কোথায়, কেমন কাটছে তা জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী। ঢাকাতেই আছেন অপু বিশ্বাস। এবার তিনি ঢাকাতেই পূজা উদযাপন করছেন। তিনি বলেন, পূজায় সাজপোশাকে ট্র্যাডিশনাল বিষয়টি থাকে। কারণ পূজা ট্র্যাডিশনাল একটি বিষয়। পূজার বিকালগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করছি। জয়কে নিয়ে এবার অনেক আনন্দ করছি। ওকে নিয়েই এবারের সব পরিকল্পনা। তবে একবুক হতাশা নিয়ে অপু বলেন, এখন আসলে পূজা এলেই মন খারাপ থাকে। এখনকার পূজা আর আগের মতো খুশি খুশি লাগে না। মন খারাপ থাকার কারণ কী? জানতে চাইলে অপু বিশ্বাস বলেন, মা নেই বলে পূজা এলে মনটা কালো মেঘের মতো অন্ধকার হয়ে যায়। নিজেকে খুব একা একা লাগে। মায়ের জন্য আজকের আমি। তার ভালোবাসা, আদর ও অনুপ্রেরণা ছিল বলেই এতদূর আসতে পেরেছি। সেই মা নেই। তাকে ছাড়া পূজার আনন্দ কোনো দিন হবে না। মাকে প্রতিদিনই মনে পড়ে। তবে পূজার সময় বেশি মনে পড়ে। অপু বিশ্বাস বলেন, ছোটবেলার পূজা অনেক সুন্দর ছিল। অনেক পরিকল্পনা থাকত, আনন্দ থাকত। সারা বছর অপেক্ষায় থাকতাম, কখন পূজা আসবে। এখনকার পূজার সঙ্গে তখনকার সেই তুলনা চলে না। এখন সব দিন একই রকম হয়ে গেছে। পেশাগত ব্যস্ততা আর পূজার ব্যস্ততা এক হয়ে গেছে। উলেস্নখ্য, অপু বিশ্বাস শাকিব খানকে বিয়ে করেছিলেন এবং সেই সংসারে একটি সন্তানও নিয়েছেন। শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের বিয়ে হয় ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তাদের সন্তান আব্রাম খান জয়ের। শাকিব-অপু দুজনেই সন্তান জন্মের বিষয়টি গোপন রাখেন। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল একটি টিভি চ্যানেলের সরাসরি অনুষ্ঠানে এসে বিয়ে ও সন্তানের খবর ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। আর ওই ফাঁস করার দায়েই মন খারাপের শুরু অপু বিশ্বাসের। কারণ, পরের বছর ২০১৮ সালের ১২ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। এই সাবেক দম্পতিকে ঘিরে হয়ে গেছে অনেক কিছু। তাদের বিচ্ছেদ জানাজানি হলেও বিয়ে নিয়ে তেমন তথ্য জানেন না ভক্তরা, দেখা হয়নি বিয়ের ছবিও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বিয়ে প্রসঙ্গে কথা বলেন। তবে বিস্তারিত তেমন কিছু বলেননি তিনি। তাদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজনা ব্যবস্থাপক মামুনুজ্জামান মামুন। ২০১৭ সালের শাকিব-অপুর নবম বিবাহবার্ষিকীতে তিনি বিয়ের বিস্তারিত ঘটনা বর্ণনা করেন। আসলে অপু-শাকিকের বিয়েটাও ছিল খুব জটিল। আর হঁ্যা, এই জটিলতাই অপু বিশ্বাসের মন আজন্ম খারাপ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই বিয়েতে অপু বিশ্বাস দৃশ্যত একটা মুসলিম নাম নিলেও প্রকৃতপক্ষে তার নিজ ধর্ম পরিবর্তন করেননি। নিজের ধর্মবিশ্বাসেই অটল থেকেছেন। যদিও শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ের সময় অপু বিশ্বাস সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ের সময় সময় এই চিত্রনায়িকা নাম পরিবর্তন করে অপু ইসলাম নাম রাখেন। কিন্তু অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস মুসলিম রীতিতে শাকিব খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও তিনি ধর্মান্তরিত হননি বলে দাবি করেছেন। এছাড়া তিনি কখনো গরুর মাংস স্পর্শও করেননি বলে জানান। আমি যখন ওই বাসায় ছিলাম তখন আমার রুমের যে ফ্রিজ ছিল সেখানেও গরুর মাংস ঢোকানো নিষেধ ছিল। শাকিব এসব জানতো। শাকিবের কথায় তিনি এতোদিন তার নিজের ধর্ম আড়াল করে এসেছেন। শাকিব আমাকে ধর্মের কথা কাউকে না বলতে নিষেধ করেছে। ওর মা বাবা সবাই জানতো আমি সবসময় পূজা করতাম। অপু বলেন, 'আমি জন্মগতভাবেই সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু। আমার রুট হিন্দু। তবে আমি সব ধর্মকেই সম্মান করি। আমি জন্মগতভাবে হিন্দু।' অপু আরও বলেন, 'আমি মারা গেলে আমাকে দাফন নয় দাহ করা হবে। আমার পাসপোর্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সবখানেই আমার ধর্ম হিন্দু উলেস্নখ রয়েছে। আমার একটা বাড়ি রয়েছে একটা গাড়ি রয়েছে- সবগুলোর কাগজেই একই নাম রয়েছে। আমি যখন ভিসা নিতে যাই আমার রেলিজিয়ন জিজ্ঞেস করে, আমি বলি হিন্দু।' তবে ২০১৭ সালে রাজনীতি চলচ্চিত্রের মুক্তির পূর্বে অপু বিশ্বাস বলেছিলেন, 'আপনাদের মনের ভেতর কী আছে? অপু বিশ্বাস? নাকি অপু ইসলাম? আপনারা আমাকে যা হিসেবেই ডাকবেন তাই ঠিক আছে। আমি এখন মুসলিম। নিয়মিতই নামাজ পড়ি, রোজা রাখি। তবে কেউ আমাকে রোজা রাখা ও নামাজ শেখায়নি। আমি নিজেই বই পড়ে পড়ে শিখেছি।' ধর্ম নিয়ে এতদিন পরে কেন আলোচনা? এই প্রশ্নের জবাবে অপু বিশ্বাস বলেন, 'প্রসঙ্গক্রমে চলে এসেছে বিষয়টি। তাছাড়া আমার মনের একটা ধর্ম আছে। আমি সকল ধর্মকে সম্মান করি। আমি শাকিবের কারণেই নামাজ রোজা করেছি। কিন্তু মনের যে ধর্ম আমার সেটা হিন্দু আমি জন্মগতভাবে হিন্দু। আমি আমার পরিবারেই ফিরে গিয়েছি। যেখানে আমি মারা গেলে দাহ করা হবে।' উলেস্নখ্য, অপু বিশ্বাস 'কোটি টাকার কাবিন' দিয়ে ২০০৬ সালের পরিচিত পান। শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে নিয়মিত হন এ নায়িকা। এরপর থেকেই ক্যারিয়ারের জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকেন অপু। কারণ তখন শাকিব খান মানেই অপু বিশ্বাস। সমালোচকদের মতে, সালমান শাহ ও শাবনূরের পর এতটা সফল কোনো জুটি আসেনি। ২০১৭ পর্যন্ত শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে ৭২টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায় অপু বিশ্বাসের।